সিলেট: শুল্ক ফাঁকি দিয়ে প্রায় চার বছর চালানোর পর সাড়ে ৫ কোটি টাকা মূল্যের মার্সিটিজ ব্র্যান্ডের (এম৭০এনএসআর) একটি গাড়ি আটক করেছে সিলেট শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর।
রোববার (১০ এপ্রিল) সকালে নগরীর বিমানবন্দর সড়কের বিএম টাওয়ারের সামনে থেকে গাড়িটি নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসে সরকারের এই সংস্থা।
নগরীর মজুমদারি এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুল মালেক লন্ডন থেকে ‘কার্নেট দ্য প্যাসেজ’ এর মাধ্যমে ২০০৬ মডেলের গাড়িটি দেশে নিয়ে আসেন ২০১২ সালে।
শুল্ক কর্মকর্তারা জানান, এ নিয়মে গাড়ি আনা হলে ছয়মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দেশে ফেরত নিয়ে যেতে হয়। তা না করে গাড়ির মালিক শুল্ক ফাঁকি দিয়ে এতোদিন দেশের অভ্যন্তরে চালিয়েছেন।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর সিলেটের সহকারী পরিচালক প্রভাত কুমার সিংহ বাংলানিউজকে বলেন, নির্ধারিত সময় (ছয়মাস) পর হওয়ার পর দেশত্যাগ না করে গাড়িটি নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান বিএম টাওয়ারের মালিক ও ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক।
প্রভাত কুমার জানান, কার্নেট সুবিধায় আমদানি হলেও কারটি ফেরত নেওয়া হয়নি। কারটি আটকের জন্য বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল) বিএম টাওয়ারের গ্যারেজে হানা দিয়ে প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত হন গোয়েন্দারা। পরে রাত নয়টার দিকে মালিক তার চালকের মাধ্যমে তা সরিয়ে ফেলেন।
তিনি জানান, চালকের মোবাইল ট্রাকিং করে শুক্রবার (০৮ এপ্রিল) দুপুর থেকে গাড়িটিকে ধাওয়া করেন গোয়েন্দারা।
অবশেষে শনিবার (০৯ এপ্রিল) রাতে গাড়িটি সিলেট এয়ারপোর্ট সড়কে অবস্থিত বিএম টাওয়ারের সামনে রাখেন মালেক। পরে দোষ স্বীকার করে রাজস্ব বিভাগের সহায়তা চেয়ে চিঠি লেখেন তিনি। শুল্ক দফতরের কর্মকর্তার মুঠোফোনে এ চিঠি ক্ষুদে বার্তা আকারে পাঠান তিনি। এর প্রেক্ষিতে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়।
তবে প্রায় ৩৬ ঘণ্টার অভিযানের পর শনিবার রাতে মালিক কারটি বিএম টাওয়ারের সামনে রেখে যেতে বাধ্য হন বলে জানান প্রভাত। এক্ষেত্রে প্রতারক মালিক অভিনব পন্থা অবলম্বনের চেষ্টা করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, কারটি আটকের পর মালিক আবদুল মালেক ই-মেইল ও বাহক মারফত একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তাতে লিখেছেন, ‘কারটি দীর্ঘদিন গ্যারেজে পড়েছিল। রেজিস্ট্রেশনের জন্য চেষ্টা করছি। যেহেতু এনবিআর গাড়িটি চেয়েছে আমি দিতে এবং কাগজপত্র প্রস্তুতে রাজি’।
‘এটি তার প্রতারণার অংশ। আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো’- বলেন প্রভাত কুমার সিংহ।
রাজস্বসহ বিলাসবহুল গাড়িটির দাম প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। এর মধ্যে কারটির মূল্য ২ কোটি টাকা ও শুল্ক প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা।
প্রভাত কুমার সিংহ জানান, বিআরটিএ থেকে কোনো রেজিস্ট্রেশন না নিয়েও প্রায় চার বছর ধরে প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর (ঢাকা-৬১৪/ও) ব্যবহার করে আসছেন আব্দুল মালেক।
এ ব্যাপারে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৬
আরইউ/এনইউ/এএসআর