ঢাকা: দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ২০১৬ সালের প্রথম প্রান্তিকে দুই হাজার ৭৬০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে, যা পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
আগের বছরের তুলনায় নতুন গ্রাহক ও সেবা (আন্তঃসংযোগ আয় বাদে) থেকে অর্জিত রাজস্ব বেড়েছে ১১ দশমিক ৮ শতাংশ, যাতে ডাটা ও মূল্য সংযোজিত সেবার ভূমিকা বর্ধনশীল।
ডাটা থেকে অর্জিত রাজস্ব বেড়েছে ৭ দশমিক ১ শতাংশ, আগের বছরের তুলনায় মূল্য সংযোজিত সেবা থেকে আয় বেড়েছে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। ভয়েস কল থেকে অর্জিত রাজস্বও গত বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
বুধবার (২০ এপ্রিল) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জিপি হাউজে সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের ফল প্রকাশ করে এসব তথ্য জানায় গ্রামীণফোন।
গ্রামীণফোনের সিইও রাজিব শেঠি, সিএফও দিলীপ পালসহ অন্য কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রথম প্রান্তিক শেষে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৬৩ লাখ, যা গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনায় ০.৭ শতাংশ কম। তবে গত বছরের তুলনায় গ্রাহক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ এবং মার্চের শেষে সিম মার্কেট শেয়ার হয়েছে ৪৩ শতাংশ। এই প্রান্তিকে ৪১ লাখ নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী যোগ হওয়ায় মোট ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ।
গ্রামীণফোনের সিইও রাজিব শেঠি বলেন, দু্ই ডিজিটের গ্রাহক ও সেবা থেকে অর্জিত রাজস্ব প্রবৃদ্ধি নিয়ে আমরা একটি ভালো প্রান্তিক পার করছি। আমাদের ভয়েস থেকে অর্জিত রাজস্ব বেড়েছে, যা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। এ থেকে বোঝা যায় আমাদের প্রতিযোগিতামূলক ও সরল অফারগুলো বাজারে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম প্রান্তিকে আমরা ৪১ লাখ নতুন ইন্টারনেট গ্রাহক যোগ করেছি এবং এক হাজার ৮০৪টি নতুন থ্রিজি সাইট চালু করেছি। যার ফলে মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ এখন থ্রিজি সেবার আওতায় চলে এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আয়কর দেওয়ার পর গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে ২১ দশমিক ৩ শতাংশ মার্জিনসহ ৫শ ৪০ কোটি টাকা মুনাফার তুলনায় ২০১৬ সালের প্রথম প্রান্তিকে নিট মুনাফা হয়েছে ২০ দশমিক ৪ শতাংশ মর্জিনসহ ৫শ ৬০ কোটি টাকা। দক্ষ পরিচালনা ব্যয় ব্যবস্থাপনার কারণে এই প্রান্তিকে ইবিআইটিডিএ (অপারেটিং প্রফিট ও অন্য আইটেমের আগে) হয়েছে এক হাজার ৫শ ৩০ কোটি টাকা এবং মার্জিন দাঁড়িয়েছে ৫৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এই প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৪ দশমিক ১৫ টাকা।
গ্রামীণফোনের সিএফও দিলীপ পাল বলেন, দক্ষভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে আমরা পর পর চারটি প্রান্তিকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। একই সঙ্গে থ্রিজির আওতা বাড়াতে বিনিয়োগ অব্যাহত ছিলো।
তিনি বলেন, ভালো রাজস্ব আয় ও দক্ষ ব্যয় ব্যবস্থাপনার কারণে ইবিআইটিডিএ মার্জিনের উন্নতি হয়েছে। উচ্চতর অবচয় ও অ্যামোর্টাইজেশনের পরও শেয়ার প্রতি আয় বেড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রামীণফোন প্রথম প্রান্তিকে থ্রিজি নেটওয়ার্ক স্থাপন, টুজি নেটওয়ার্কের মানোন্নয়ন এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে ৯শ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এর ফলে আরও বেশি কল ও ডাটা ব্যবহার এবং নতুন নতুন সেবার সক্ষমতা তৈরি হয়েছে।
দেশের বৃহত্তম করদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সরকারি কোষাগারে কর, ভ্যাট, শুল্ক ও লাইসেন্স ফি হিসেবে এক হাজার ৪শ ২০ কোটি টাকা দিয়েছে, যা কোম্পানির মোট রাজস্ব আয়ের ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ।
১৯ এপ্রিল গ্রামীণফোনের ১৯তম বার্সিক সাধারণ সভায় অন্য বিষয়ের পাশাপাশি শেয়ার হোল্ডাররা ২০১৫ সালের জন্য ১৪০ শতাংশ মোট নগদ লভ্যাংশ (৮০ শতাংশ অন্তবর্তী নগদ লভ্যাংশসহ) অনুমোদন করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৬/আপ: ১৫৪৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এএ