ঢাকা: বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতিতে বিমা খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ খাতের অবমান সামান্য। অথচ প্রাকৃতিক ও অন্যান্য ঝুঁকিপ্রবণ বাংলাদেশে মানুষের দুর্দশা লাঘব, সামাজিক কল্যাণ সাধন, শিল্প এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ঝুঁকি নিরসনে বিমা খাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ খাতে সচেতনতা বাড়াতে ৬৩২ কোটি টাকা ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক সূত্র জানায়, বিমা খাতকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এ খাতের তদারকি ও নজরদারি বাড়াতে হবে। বিমা খাত তত্ত্বাবধানে সক্ষমতা অর্জনের জন্য অধিকতর উপযোগী নীতি ও পদ্ধতি প্রবর্তন করা জরুরি।
এ লক্ষ্যে বিমা খাতকে চাঙ্গা করতে মোট ৭৯০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ঋণ ৬৩২ কোটি টাকা।
বিশ্বব্যাংকের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিমা খাতকে চাঙ্গা করতেই মূলত ৬৩২ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সম্মত হয়েছেন। সচেতনতা বাড়াতে পারলে এ খাত থেকে অনেকে সামাজিক ও আর্থিকভাবে সক্ষমতা অর্জন করবেন’।
বিশ্বব্যাংক সূত্র জানায়, বিমা খাতকে নিবিড় নজরদারির আওতায় আনা এবং কর্মপদ্ধতিকে গতিশীল করা ও গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যেই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। যেন এ খাতের সব কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করা যায়। বিমা একাডেমি এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সাধারণ বিমা কর্পোরেশন ও জীবন বিমা কর্পোরেশনের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা ও কার্যকারিতাও বাড়ানো হবে।
বাংলাদেশের মোট কর্মবলের মাত্র ১০ শতাংশ প্রচলিত পেনশন ব্যবস্থার সেবা পাচ্ছেন। সম্প্রতি সরকার সামাজিক নিরাপত্তা নীতিকে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল-২০১৪ প্রণয়ন করেছে। এ কৌশল বাস্তবায়ন করতে বিশ্বব্যাংকের ঋণ ব্যবহার করা হবে।
ইআরডি সূত্র জানায়, বিমা খাতে সহায়তার জন্য প্রথমে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ জানানো হয়। এরপরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে বিমা শিল্পের উন্নয়ন ও পেনশন তহবিল গঠন করতে ‘ইন্স্যুরেন্স অ্যান্ড প্রাইভেট পেনশন মার্কেট ডেভলপমেন্ট’ শীর্ষক কারিগরি প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিতে সম্মত হয়।
বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য ও মুখপাত্র যুবের আহমেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে বিমা খাত কার্যকরভাবে তত্ত্বাবধানের লক্ষ্যে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সামর্থ্য বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের বিমা একাডেমিকে আধুনিক করা হবে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সাধারণ বিমা কর্পোরেশন ও জীবন বিমা কর্পোরেশনের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা হবে।
এছাড়া বেসরকারি পেনশন মার্কেট গঠন, আইনি কাঠামো শক্তিশালীকরণ, বেসরকারি পেনশনের তথ্য সংরক্ষণ এবং কোম্পানি ও পেনশন সেভিংস কোম্পানি গঠন করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের ঋণে বিমা খাতের চারটি খাতের ব্যাপক আধুনিকায়ণও করা হবে। বিমা একাডেমির আধুনিকায়নে ২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমা প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ এবং শক্তিশালীকরণে ৩৫ কোট ৫৫ লাখ টাকা খরচ করা হবে। বেসরকারি পেনশন মার্কেট গঠনে ১৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং বিমা খাত নজরদারি করতে প্রায় চার কোটি টাকা খরচ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর