ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফাঁকিবাজ বিদেশি নাগরিক

বাজেটের আগেই ‘সর্তক’ করল এনবিআর

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৪ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৬
বাজেটের আগেই ‘সর্তক’ করল এনবিআর

ঢাকা: বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে কর্মরত আয়কর ফাঁকিবাজ বিদেশি নাগরিকদের আসন্ন বাজেটের আগেই চূড়ান্তভাবে সর্তক করলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সঙ্গে চলতি অর্থবছর বাজেটে অর্থমন্ত্রীর ‘সুস্পষ্ট’ নির্দেশনা স্মরণ করিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সংস্থাটি।

নির্দেশনা না মানলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগকারী কোম্পানি, প্রযুক্তি, এনজিও, হোটেলসহ যেসব প্রতিষ্ঠানে বিদেশি নাগরিকরা কর্মরত, তাদেরকেও আয়করের বিধি-বিধান মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে।

অন্যদিকে ফাঁকিবাজ এসব নাগরিকদের খুঁজে বের করতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দু’টি টাস্কফোর্স সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ডাটা ব্যাংক তৈরির কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এছাড়া কর অঞ্চলগুলো এসব নাগরিকের আয়কর বিবরণী যাচাই ও যেসব নাগরিক আয়কর বিবরণী দাখিল করেন না তাদের খুঁজে বের করার কাজ শুরু করেছে।

জরিমানা বৃদ্ধিসহ চলতি বাজেটে রাজনৈতিক নির্দেশনাকে আরো কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে বলে এনবিআরের একটি সূত্র জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশে বিদেশি নাগরিকদের কাজ করার সুযোগ বিরাজ করছে। পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও বিদেশি নাগরিকের উপার্জিত আয়ের ওপর উৎসে কর কর্তনের বিধানসহ আয়কর প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সেক্ষেত্রে কোম্পানি, শিল্প, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, হোটেল ও রেস্টুরেন্টসহ যেসব প্রতিষ্ঠানে বিদেশি নাগরিক নিয়োজিত ও ভবিষ্যতে নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে তাদের আয়কর সংক্রান্ত বিধি-বিধান পরিপালন করতে হবে’।

চলতি অর্থবছর বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন,‘যারা এখন থেকে অবৈধভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজে নিয়োজিত থাকবেন, সে প্রতিষ্ঠানের ওপর প্রদেয় আয়করের ৫০ শতাংশ বা ৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত কর আরোপ করা হয়। সেসব প্রতিষ্ঠানের সব রকম কর সুবিধা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। অবৈধ নাগরিক ও নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, জেল ও জরিমানা করা হবে’।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাজেটের আগেই আরেকবার সর্তক করা হয়েছে’।

তিনি বলেন,‘চলতি বাজেটে অর্থমন্ত্রীর রাজনৈতিক নির্দেশনা ঘনিষ্ঠভাবে ফলোআপ করছে এনবিআর। এ নির্দেশনায় আমরা অনেক দূর এগিয়েছি’।

‘অবৈধ ও আয়কর ফাঁকিবাজ বিদেশি নাগরিকদের খুঁজে বের করতে ইতোমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে গঠিত দু’টি টাস্কফোর্স কাজ করছে। ডাটা ব্যাংক তৈরি প্রক্রিয়াধীন। কর অঞ্চলগুলো কাজ করছে’।

নির্দেশনা পাওয়া গেছে, সক্রিয়ভাবে বাস্তবায়নে আমরা জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কর ফাঁকি দিয়ে বাঁচার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান চেয়ারম্যান।

সূত্র মতে, দেশে প্রায় ৫ লাখ বিদেশি নাগরিক কাজ করছেন। তারা আয়কর বিবরণী দাখিল করেন না। তাদের অনেকেই আয়কর প্রদান না করেই দেশত্যাগ করেন।

আবার অনেকের ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও বছরের পর বছর কাজ করছেন। তাদের খুঁজে বের করতে টাস্কফোর্সের পাশাপাশি স্টিয়ারিং কমিটি করা হয়েছে।

কর আইন সম্পর্কে জানাতে ও আয়কর সনদপত্র যাছাই করতে বিমানবন্দর ও শুল্ক স্টেশনে আলাদা ডেস্ক করার কাজও শুরু করেছে এনবিআর।

এছাড়া বিনিয়োগ বোর্ড, বেপজা, এনজিও ব্যুরো, এনএসআই, এসবি, পাসপোর্ট ও বর্হিগমন বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিটিআরসি থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে টাস্কফোর্স।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, জুনের ২য় সপ্তাহে স্টিয়ারিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সব তথ্য সমন্বয়ের মাধ্যমে সব কিছু বের হয়ে আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৫০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৬
আরইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।