ঢাকা: আদালতের আদেশ অমান্য করে পরিবেশ দূষণ করায় রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারের ট্যানারি শিল্পনগরীতে স্থানান্তর না করা পর্যন্ত ১৫৪ ট্যানারিকে প্রতিদিন গুনতে হবে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা।
ট্যানারিগুলোর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে আদালতের জিজ্ঞাসার জবাবে ১৫৫ ট্যানারির তালিকা বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) আদালতে দাখিল করেছিলো শিল্প মন্ত্রণালয়।
শিল্প সচিবের পক্ষে আদালতে এ তালিকা দাখিল করেন আইনজীবী রইস উদ্দিন। সেই ১৫৪টি ট্যানারির তালিকা অনুলিপি বাংলানিউজের হাতে এসেছে, যাদের প্রত্যেককে সাভারে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সেগুলো হলো- রানা লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আমিন ট্যানারি লিমিডেট, কাদের লেদার কমপ্লেক্স, লাক্সিও লিমিটেড, হেলাল ট্যানারি লিমিডেট, লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ, প্রগতি লেদার, ঢাকা ট্যানারি লিমিডেট, জামিলা ট্যানারি লিমিডেট, আল মদিনা ট্যানারি, বে ট্যানারিজ লিমিডেট, পাইওনিয়ার ট্যানারি লিমিডেট, আজিজ ট্যানারি লিমিডেট, আইয়ুব ব্রাদার্স ট্যানারি লিমিডেট, নিউ কাজল ট্যানারি, এইচ অ্যান্ড এইচ লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এইচ বে ট্যানারি লিমিডেট, কিড লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, সুপিরিয়র লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, রুমা লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
আর এম এম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বিলগস এজেন্সি লিমিটেড, ইউসুফ ব্রাদার্স ট্যানারি লিমিডেট, কালাম ব্রাদার্স ট্যানারি লিমিডেট, জনতা ট্রেডিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আনোয়ার ট্যানারি প্রাইভেট লিমিডেট, ঢাকা হাইড স্কিনস লিমিটেড, দ্য আর্থ ইন্টারন্যাশনাল ট্যানারি লিমিডেট, সালমা লেদার করপোরেশন, অ্যাপেক্স ট্যানারি লিমিডেট, আজমীর লেদার, মদিনা লেদার করপোরেশন, ইউসুফ লেদার করপোরেশন লিমিটেড, ইব্রাহিম লেদার’স, করিম লেদার’স লিমিটেড, মুক্তা ট্যানারি, ইউসুফ লেদার করপোরেশন, রুমি লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মিতালী ট্যানারি, বেঙ্গল লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড।
জাবেদ ট্যানারি, ভলয়া ট্যানারি লিমিটেড, আর কে লেদার কমপ্লেক্স, আবুল খায়ের ট্যানারি, গ্রেট ইস্টার্ন ট্যানারি প্রাইভেট লিমিটেড, প্যারামাউন্টস ট্যানারিজ প্রাইভেট লিমিটেড, গ্রিন অ্যারো ট্যানারি লিমিটেড, বিএস লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড, সামিনা ট্যানারি প্রাইভেট লিমিটেড, ক্রিসেন্ট ট্যানারি লিমিটেড, মুক্তি ট্যানারি, শাহজালাল লেদার কমপ্লেক্স, মিল্লাত ট্যানারি, বাংলা টেন লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড, স্বাধীন ট্যানারি, মামুন ট্রেডার্স, এম এস ট্যানারি ট্রেডার্স, সাইফুল ইসলাম ট্যানারি, ইকবাল ব্রাদার্স ট্যানারি, জাকির হোসেন ট্যানারি।
চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানি, নবীপুর ট্যানারি, মাইজদী ট্যানারি, মুসলিম ট্যানারি, স্বদেশ ট্যানারি লিমিটেড, পেরানা ট্যানারি, আইল্যান্ড ট্যানারি, ফেনী ট্যানারি প্রাইভেট লিমিটেড, ইব্রাহিম ট্যানারি, আরাফাত লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড, মারসন্স ট্যানারি, গুলশান ট্যানারি, চাইনিজ লেদার ট্যানারি প্রাইভেট লিমিটেড, দি কুমিল্লা ট্যানারি, জহির ট্রেইনিং ইন্ডাস্ট্রিজ, হাইটেক লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড, কারসাজ ট্যানারি লিমিটেড, করিম লেদার ইউনিট-২, এফ কে লেদার কমপ্লেক্স, চাঁদপুর ট্যানারি।
আহসান হাবিব অ্যান্ড ব্রাদার্স, সদর ট্যানারি, সোনালী ট্যানারি, এইচ এস ট্যানারি, সিটি লেদার ট্যানারি, মিজান অ্যান্ড সুমন ট্যানারি প্রাইভেট, সালাম ট্যানারি, এফ এফ এম লেদার কমপ্লেক্স, ক্যাপিটাল ট্যানারি, মহিন ট্যানারি, ইস্ট এশিয়া ট্যানারিজ লিমিটেড, ফিনিক্স লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড, কালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স ট্যানারি, লিয়ন এন্টারপ্রাইজ, কামাল ট্যানারি প্রাইভেট লিমিটেড, জিন্দাবাদ ট্যানারি, টিপারা ট্যানারি, সানলাইট ট্যানারি, ইন্টারন্যাশনাল ট্যানারি, মাদার ট্যানারি।
সারওয়ার লেদার করপোরেশন লিমিটেড, ভূঁইয়া ট্যানারি, রয়েল ট্যানারি, সাথী লেদার লিমিটেড, কালু লেদার করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড, মমতাজ ট্যানারি, নবারুণ ট্যানারি, জুবলি ট্যানারি, রোশনি কমপ্লেক্স, সালমা ট্রেডিং, রুবি লেদার কমপ্লেক্স প্রাইভেট লিমিটেড, মিরাজ লেদার কমপ্লেক্স, জে এ লেদার কমপ্লেক্স, ইসমাইল লেদার করপোরেশন, জুলিয়েট এন্টারপ্রাইজ, হোসাইন ব্রাদার্স ট্যানারি, এস অ্যান্ড এস ট্যানারি, মোরশেদ ব্রাদার্স ট্যানারি, নিশাত ট্যানারি, শাহী ট্যানারি।
কোহিনুর ট্যানারিজ, প্রিন্স লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ, এ কে লেদার কমপ্লেক্স, আসিফ লেদার, গোল্ডেন লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ, মেট্রো ট্যানারি, এম বি ট্যানারি লিমিটেড, আর এ এন লেদার, এস এ লেদার, সবুজ করপোরেশন, রহমান ওভারসিজ এক্সপোর্ট লিমিটেড, ইউসুফ ট্যানারি, চৌধুরী লেদার অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড, হেলেনা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, এ বি এস ট্যানারি, পূবালী ট্যানারিজ, জামান ট্যানারি, ইসলামিয়া ট্যানারি, শরীফ লেদার করপোরেশন, এশিয়া ট্যানারি।
বেঙ্গল পলি এক্সপোর্ট কোম্পানি, আনজুমান ট্রেডিং, আলেয়া ট্যানারি, তাজ ট্যানারি, তাজিন লেদার, মক্কা-মদিনা লেদার কমপ্লেক্স, রাজিব লেদার কমপ্লেক্স, ফেন্সি লেদার কমপ্লেক্স, ডেল্টা লেদার কমপ্লেক্স, সোনার বাংলা ট্যানারি, নজরুল ট্যানারি, খোকন ট্যানারি, মুন ট্যানারি এবং রিলায়েন্স ট্যানারি লিমিটেড ইউনিট-১।
এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০১ সালে ট্যানারি শিল্প হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
দীর্ঘদিন ধরে ওই আদেশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় অন্য এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প অন্যত্র সরিয়ে নিতে ২০০৯ সালের ২৩ জুন হাইকোর্ট ফের নির্দেশ দেন।
সরকারপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরে ওই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়িয়ে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়।
কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও ট্যানারি স্থানান্তরিত না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা করেন পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মনজিল মোরসেদ।
এ মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
পরে গত বছরের ২১ এপ্রিল আদালতের তলবে হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন শিল্পসচিব।
গত ১৩ এপ্রিল রাজধানীর হাজারীবাগে এখনো যেসব ট্যানারি ব্যবসা পরিচালনা করছে তাদের তালিকা চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
আদালতের এ আদেশ অনুসারে শিল্পসচিবের পক্ষে আইনজীবী রইস উদ্দিন ১৫৫টি ট্যানারির তালিকা হস্তান্তর করেন। এর মধ্যে মাত্র একটি ট্যানারি স্থানান্তর করে। এরপর আদালত জরিমানার আদেশ দিয়ে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৯ ঘন্টা, জুন ১৮, ২০১৬
ইএস/এএসআর
** ট্যানারি না সরালে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
** হাজারীবাগে থাকা ট্যানারির তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
** ট্যানারি বন্ধ করে অব্যাহতি পেলেন তিন মালিক