ঢাকা: স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের। প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাশে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল, রংপুরের বুড়িমারী পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি উঠছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায়।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এ প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
সূত্র মতে, ‘সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) সড়ক সংযোগ প্রকল্প (২) এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি একনেক বৈঠকের কার্যতালিকায় প্রথমেই স্থান পেয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবারের একনেক সভায় মোট পাঁচটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে। এর মধ্যে এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি কার্যতালিকার এক নম্বরে রয়েছে।
তিনি জানান, দেশের অন্য চারলেন মহাসড়কের চেয়ে এটি আরও আধুনিক হবে। সড়কজুড়ে ৬ থেকে ৮ কিলোমিটার পরপর উন্নত দেশগুলোর আদলে প্রায় ৮০টি আধুনিক ‘বাস-বে’ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, স্কুল, কলেজ, হাসপাতালের কাছে এসব ‘বাস-বে’ নির্মাণ করা হবে, যেন এসব এলাকায় কোনো ধরনের জটলা তৈরি না হয়। এড়ানো যায় অনাঙ্ক্ষিত বা দুর্ঘটনা।
সূত্র জানায়, এ প্রকল্পে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ১২২টি বাস-বে নির্মাণের প্রস্তাব দেয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে। তবে প্রস্তাব আসার পর পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, “বিদেশেও ১৯০ কিলোমিটার সড়কে ১২২টি ‘বাস-বে’ নেই। এই সড়কে ৮০টি ‘বাস-বে’ নির্মাণ করলেই যথেষ্ট। ” সে হিসেবে বলা যাচ্ছে ৮০টি বাস বে’ই নির্মিত হচ্ছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র আরও জানায়, উন্নত দেশগুলোর মতোই আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে এ চারলেনে। প্রকল্পের আওতায় এ সড়কের দু’পাশে ধীরগতিসম্পন্ন যানবাহনের লেনও তৈরি করা হবে, যার ফলে এটি ছয়লেনে প্রশস্ত হবে।
এর পাশাপাশি মহাসড়কে ২ হাজার ৬৩৫ মিটারের তিনটি ফ্লাইওভার, ৪১১ মিটারের একটি রেলওয়ে ওভারপাস, ৩২টি ব্রিজ, ১৬১টি কালভার্ট, ১১টি পথচারী ওভারপাস, ৩৯টি আন্ডারপাস এবং একটি ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ১২ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি ধরা হয়েছিল। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশনের পর্যবেক্ষণের পর ব্যয় কমিয়ে ১১ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। প্রকল্পের সরকারি অর্থায়ন ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা। বাকি অর্থ আসবে প্রকল্প সাহায্য থেকে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল।
এই প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফাহমিদা হক খান বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পটি মঙ্গলবার একনেক সভায় উপস্থান করা হবে। আমরা প্রথমে যে ব্যয় নির্ধারণ করেছিলাম তা থেকে কিছু কমানো হয়েছে। ১৯০ কিলোমিটার ফোরলেন মহাসড়েকর প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৬
এমআইএস/এইচএ/
** মসৃণ ফোরলেনজুড়ে থাকবে ‘বাস-বে’