ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এক কোটি পিস চামড়া সংগ্রহে টানা পরিশ্রম

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৬
এক কোটি পিস চামড়া সংগ্রহে টানা পরিশ্রম ছবি: দিপু মালাকার- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: কোরবানির দিন দুপুর থেকে ফুরসত নেই রাজধানীর লালবাগের পোস্তার চামড়ার আড়তগুলোতে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো বিশ্রাম নেই ব্যবসায়ীদের।

তবে তাতে কোনো পরিশ্রান্তির লেশ নেই তাদের চোখে মুখে। পালা করে ছেলে-বুড়ো সবাই কর্মচারীদের নিয়ে চামড়া কেনা, লবণ দেওয়া ও বিশ্রামের কাজ করছেন হাসিমুখে।
 
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পোস্তার চামড়ার আড়তগুলোতে গিয়ে জানা গেছে, এবার বেশি পশু কোরবানি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রাও বেশি। সব মিলিয়ে এক কোটি পিস চামড়া সংগ্রহ করতে চান তারা। আর চামড়া দ্রুত পচনশীল পণ্য হওয়ায় সময়ের দিকে খেয়াল না রেখে হাত লাগাতে হচ্ছে মালিক-শ্রমিক সকলকে।

পোস্তার আড়ত মালিকদের দাবি, এই একটানা পরিশ্রমের কাজটা চলবে কমপক্ষে এক সপ্তাহ। এরপর বিশ্রাম। তবে পুরোপুরি বিশ্রাম নয়। তখন কাঁচা চামড়ার বদলে আসতে শুরু করবে লবণ দেওয়া চামড়া। সেগুলো পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা না থাকায় এখনকার মতো একটানা খাটুনি খাটতে হবে না তখন।
 
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি হাজী দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এবার এক কোটি পিসের বেশি পশু কোরবানি হওয়ায় তারা কমপক্ষে এক কোটি পিস চামড়া সংগ্রহ করতে চান। বাকিটা ট্যানারি মালিকরা সরাসরি সংগ্রহ করছেন।
 
দেলোয়ার বলেন, ‘এবার ৪০ লাখের ওপরে গরু কোরবানি হচ্ছে। আর ছাগল, মহিষ ও ভেড়া মিলে কোরবানি হয়েছে ৭০ লাখের ওপরে। সর্বোচ্চ ১০ লাখ পিস চামড়া নিজস্ব লোক দিয়ে কিনতে পারবেন ট্যানারি মালিকরা। বাকি এক কোটি পিস চামড়া আমরা সংগ্রহ করবো। আমাদের সে প্রস্তুতি আছে’।
 
মৌসুমী ব্যবসায়ীদের হাহাকার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তাদের আমরা বারবার সতর্ক করেছি। তারা যেহেতু এই কাজ বছরে একবার বা জীবনে একবার করেন, তাই তাদের চামড়ার মাপ সম্পর্কে ধারণা নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির বৈঠকের মাধ্যমে ঢাকায় ৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ টাকা বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দর নির্ধারণ করা হয়। সেখানে আমরা লবণ ছাড়াই সেই দরে চামড়া কিনছি। অথচ তারা লোকসানের কথা বলছেন। আপনি যদি কিনতে গিয়েই ঠকে আসেন, তবে বিক্রির বাজারে আপনাকে জেতাবে কে?’

তিনি বলেন, ‘মৌসুমী ব্যবসায়ীরা ৫০ হাজার টাকার ১৮ ফুটের চামড়ার দর আর দুই লাখ টাকার ৩০ ফুটের চামড়ার দর যদি মিলিয়ে ফেলেন, আমাদের কি করার আছে!’
 
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আফতাব খান বলেন, চামড়া সংগ্রহে এবার তিনটি দিক আছে। দু’টি ভালো, অন্যটা খারাপ। ভালো দিকগুলো হলো- প্রচুর কোরবানি হয়েছে, ফলে চামড়ার সংকট নেই। আবার সঠিক সময়েও চামড়া আড়তে আসা শুরু হয়েছে। তবে খারাপ দিক হলো বৃষ্টি। চামড়ার পশমের অংশ ভিজে যাওয়ায় সময়মতো লবণ দিতে না পারলে তাই তা পচে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে আমরা নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছি’।
 
তিনি বলেন, ‘ভারতে চামড়া পাচার না হলে এবার এক কোটির বেশি চামড়া সংগ্রহ করতে পারবেন দেশি ব্যবসায়ীরা। এতে রফতানি খাতে আরো প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৬
আরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।