ঢাকা: বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা এখানে নির্বিঘ্নে বিনিয়োগ করতে পারেন।
বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং বিনিয়োগের বিষয় তুলে ধরে এ কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রূপালী ব্যাংকের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশিদ।
সম্প্রতি নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটের স্থানীয় একটি হোটেলের মিলনায়তনে এনআরবি বিজনেস নেটওয়ার্ক আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগে উজ্জ্বল সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখছিলেন তিনি।
ড. মো. হাসিবুর রশিদ বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এখানে উন্নয়ন হচ্ছে। আর এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, গ্রাম পর্যায়ে এর বিকাশ ঘটাতে হবে। এজন্য সরকারের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে।
আয়োজক নেটওয়ার্ক’র পরিচালক হাসানুজ্জামান হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষক ড. মো. আকরাম হোসেন ও সোনালী এক্সচেঞ্জ ইনক’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও মোহাম্মদ আতাউর রহমান।
বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক ঠিকানা’র প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদ, সাপ্তাহিক আজকাল-এর প্রধান সম্পাদক ও জেবিবিএ নিউইয়র্ক’র সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ জিকো, ডা. আব্দুল লতিফ, মির্জা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সেমিনার পরিচালনা করেন নেটওয়ার্ক’র আরেক পরিচালক মোশাররফ হোসাইন।
সেমিনারে অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশিদ বলেন, দর্শনের সঙ্গে ব্যবসার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে বিনিয়োগের জন্য নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ। বিগত ৬-৭ বছরে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দেশের আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। ফলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দ্বিগুণ হয়েছে। দেশের মানুষ এখন ‘লং উইকেন্ড’র কথা ভাবছেন।
রূপালী ব্যাংকের এ পরিচালক উল্লেখ করেন, ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার সময় আমেরিকা, ইউরোপের দেশগুলোকে যখন নানা সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়েছে, তখন বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিলো।
তিনি বলেন, আমাদের ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়নের চিন্তা-ভাবনা পাল্টিয়ে আঞ্চলিক উন্নয়নের কথা ভাবতে হবে। সরকার এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এতে রাজধানী ঢাকার যানজটসহ অন্যান্য সমস্যার যেমন সমাধান হবে, তেমনি দেশের অন্যান্য অঞ্চলও উন্নয়নের মুখ দেখবে। উন্নয়নের জন্য যে কোনোভাবে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করাই লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।
দেশে মাটি থেকে শুরু করে সবকিছুই উর্বর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই উর্বরতা কাজে লাগাতে হবে। প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ করতে চান। কিন্তু এজন্য যেসব নিরাপত্তার দরকার তা নিশ্চিত করা হয় না। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর লাল ফিতার দৌরাত্ম্য, রাজনৈতিক প্রভাব বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় বাঁধা। এটি রোধ করতে হবে।
ড. হাসিবুর রশিদ বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সব ধরনের অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ধরনও পাল্টে গেছে। দেশব্যাপী নতুন নতুন ফার্ম গড়ে উঠেছে। তবে আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য প্রথমে ছোট ছোট কল-কারখানা গড়ে তোলাই ভাল।
১৯৮৫-৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে ওঠা শক্তিশালী অবকাঠামোর কারণেই আমরা আজকের আমেরিকা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের হতাশ হলে চলবে না, আশাবাদী হতে হবে।
ড. আকরাম হোসেন বলেন, কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের যেকোনো দেশেই বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী অবকাঠামো আর সঠিক ‘পলিসি’। বাংলাদেশের ‘উন্নয়ন পলিসি’ ভালো, কিন্তু ব্যবস্থাপনা খারাপ।
তিনি ছোট-খাটো ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে বড় বড় ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য নতুনদের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৬
এসই/এইচএ/