ঢাকা: বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়নের প্রশংসা করে সকল বাংলাদেশিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশে সফররত ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট এর প্রতিনিধি দল।
বৃহস্পতিবার (নভেম্বর ১৭) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ প্রশংসা করেন তারা।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিটির চেয়ারম্যান বান্ড লেংগ।
এ সময় তারা জানান, অসম্ভব দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে ইইউ।
বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, শ্রম আইন সংশোধন, নিরাপদ ও কর্মবান্ধব কাজের পরিবেশে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ইইউ প্রতিনিধি দল।
এছাড়াও বাংলাদেশ উন্নয়শীল দেশের কাতারে প্রবেশ করলে বাণিজ্য ক্ষেত্রে জিএসপি প্লাস প্রদানের বিষয়েও কথা দিয়েছে প্রতিনিধি দলটি।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইইউ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। বাংলাদেশের মোট রপ্তানি ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রপ্তানি হয় ইইউভুক্ত দেশগুলোতে। ইইউ বাংলাদেশকে আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া সকল পণ্যে ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি সুবিধা দিয়ে আসছে।
এছাড়া অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর বিল্ডিং ও ফায়ার সেফটি, শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, কর্মবান্ধব পরিবেশ প্রতিষ্ঠায় সরকার এবং কারখানার মালিকদের গৃহীত পদক্ষেপেও প্রতিনিধি দল সন্তুষ্ট।
এ সময় প্রতিনিধি দলের নেতা বান্ড লেংগ সাংবাদিকদের বলেন, এলডিসিভুক্ত ৪৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে। এজন্য বাংলাদেশের সকল জনগণকে অভিনন্দন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে আমরা খুশি। ইইউ বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। ভবিষ্যতে যৌথ আলোচনার মাধ্যমে আরো উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হলে বাণিজ্য ক্ষেত্রে জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদানে সহায়তার জন্য আমরা পদক্ষেপ নেবো। তবে সে ক্ষেত্রে ২৭টি কনভেনশন অনুসরণ করার প্রয়োজন হবে বাংলাদেশের।
লেংগ আরো বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক সেক্টরে বড় ধরনের উন্নতি হয়েছে। কারখানার নিরাপত্তা, শ্রমিকদের অধিকার, নিরাপদ কাজের পরিবেশের অনেক উন্নতি হয়েছে। এ সেক্টরে গৃহীত পদক্ষেপ সন্তোষজনক।
এ সময় তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাঙ্গালি বীরের জাতি, অনেক প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করে বাংলাদেশ আজ এ অবস্থানে এসেছে। তৈরি পোশাক খাতে ১৯৯০ সালে শিশু শ্রম বন্ধের চ্যালেঞ্জ এসেছিল। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানির কোটা পদ্ধতি তুলে নেওয়া হয়েছিল। অনেকেই মনে করেছিল বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত আর এগুতে পারবে না। কিন্তু বাংলাদেশ সফলভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শিশু শ্রম বন্ধ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি বেড়েই চলছে। জিএসপি প্লাস পেতে বাংলাদেশ অবশ্যই সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।
বৈঠকে ১৭ সদস্যের ইইউ প্রতিনিধি দল ও ১১ সদস্যের বাংলাদেশি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৬
আরএম/আরআই