ঢাকা: বিদ্যুৎ খাতের মাস্টারপ্ল্যান অনুসারে ২০২১ সাল নাগাদ ২৪ হাজার এবং ২০৩০ সালে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে।
সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে শুধু কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের টার্গেট নিয়েছে ২০ হাজার মেগাওয়াট।
মাতারবাড়ি, পায়রা, রামপাল, কক্সবাজারের পেকুয়া ও মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে আমদানি নির্ভরতার পাশাপাশি দেশি কয়লা উত্তোলন করে এসব কেন্দ্রে ব্যবহার করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি কয়লার উৎপাদনও বৃদ্ধি করতে চায়।
বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিটি হবে ১ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন। এসব কেন্দ্রের কাঁচামাল হিসেবে দেশি কয়লা ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৫২ শতাংশ পুড়বে আমদানি নির্ভর কয়লা, বাকিটা দেশি কয়লা দিয়ে পূরণ করা হবে। তাই কয়লার উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। এ লক্ষ্যে দিনাজপুরের পার্বতীপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও বিরামপুরের বর্তমান মাইনিং এলাকার কাছে উত্তর ও দক্ষিণ মাইন বৃদ্ধির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।
‘ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি ফর ডেভেলপমেন্ট অব দিঘিপাড়া কোলফিল্ড অ্যাট দিঘিপাড়া দিনাজপুর’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হবে। কয়লা উত্তোলনে প্রস্তুত করতে মোট ব্যয় করা হবে ২০ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে কৃষিশস্যের ক্ষতিপূরণ দিতে সাড়ে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে মন্ত্রণালয়।
প্রকল্পের আওতায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল) প্রকল্প এলাকায় বিভিন্ন ধরণের সার্ভে করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে- ৬০টি বোর হোল ড্রিলিং, ছয় কিলোমিটার থ্রি-ডি সাইসমিক সার্ভে, হাইড্রোজিওলজিক্যাল স্ট্যাডি, চারটি প্রোডাকশন কূপ খনন ও ২৪ বর্গকিলোমিটার টপোগ্রাফিক সার্ভে।
কয়লা উত্তোলন এলাকায় পুনর্বাসন, জমি অধিগ্রহণ ও লিজের পরামর্শক সেবার পাশাপাশি স্থানীয় ও বৈদেশিক পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রকল্পের ১৯ ক্যাটাগরিতে মোট ২৩ জন পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হবে। এ খাতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। কয়লাখনি এলাকা পরিদর্শনের জন্য ভাড়া বাবদ ব্যয় করা হবে আরও ৬৬ লাখ টাকা।
চলতি সময় থেকে ২০১৯ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রাথমিকভাবে ভূ-গর্ভস্থ (আন্ডারগ্রাউন্ড) পদ্ধতি প্রয়োগ করে কয়লা তোলার কথা চিন্তা করেছিল সরকার। এ পদ্ধতিতে প্রতি বছর ৩ মিলিয়ন পাউন্ড কয়লা উত্তোলন করা যেতো। সরকার এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে উন্মুক্ত (ওপেন পিট) পদ্ধতিতে কয়লা তোলার কথা চিন্তা করছে। ফলে প্রতি বছর এখান থেকে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড কয়লা তোলা যাবে। এ কয়লার পুরোটাই দেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার করারও পরিকল্পনা রয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘ওপেন পিট পদ্ধতিতে বছরে ৫ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি কয়লা উত্তোলনের বিষয়ে দিঘিপাড়ায় খুব শিগগিরই আমরা বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ দেবো’।
তবে নতুন করে কয়লা উত্তোলনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনো মন্তব্য করেননি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর