ঢাকা: ভবিষ্যতে যারা ভ্যাট-আয়কর দেবেন, তারা শান্তিতে থাকবেন। আর যারা দেবেন না তাদের নিয়ে নাড়াচাড়া করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ১০ ডিসেম্বর জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ৯-১৫ ডিসেম্বর জাতীয় ভ্যাট সপ্তাহে উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, সর্বোচ্চ সেবার মানসিকতা নিয়ে শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) থেকে ভ্যাট সপ্তাহ উদযাপন করা হবে। সর্বোচ্চ আয়কর দিয়ে আয়করদাতারা যেভাবে বাহাদুরি দেখিয়েছেন, সেভাবে ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দিয়েও বাহাদুরী দেখাবেন। ‘ভ্যাট দিচ্ছে জনগণ, দেশের হচ্ছে উন্নয়ন’ এ স্লোগানে ঢাকাসহ সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে এবারের ভ্যাট দিবস ও সপ্তাহ উদযাপন করা হবে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা জনগণের কাছ থেকে ভ্যাট সংগ্রহ করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিচ্ছেন। এ অভ্যাস যেন সর্বত্র বিস্তৃত হয়, এটি যেন সংস্কৃতিতে পরিণত হয়, সে প্রত্যাশা নিয়েই এনবিআর কাজ করছে। আয়কর দিবস ও আয়কর সপ্তাহের কারণে এবার ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ নতুন ব্যঞ্জনা পাবে।
করদাতাদের সর্বোচ্চ ভ্যাট সেবা দিতে একটি কলসেন্টার উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী। এ কলসেন্টারে একটি নম্বর থাকবে, যেখানে ফোন করে ভ্যাট সম্পর্কে যেকোনো পরামর্শ নিতে পারবেন নাগরিকরা। কর শিক্ষণের মতো ভ্যাট শিক্ষণ ফোরামও করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আগামী দিনে রাজস্ববান্ধব একটি মন-মানসিকতা নিয়ে প্রস্তুত থাকতে পারেন।
চেয়ারম্যান বলেন, চারজন তরুণ আইটি উদ্যোক্তা একটি ভ্যাট চেকার অ্যাপস তৈরি করেছিলেন। খুব শিগগিরই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি উদ্ভাবনীমূলক প্রতিযোগিতা শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। যেখানে শিক্ষার্থীরা ভ্যাট চেকার অ্যাপসের আদলে কি কি অ্যাপস তৈরি করা যায় এবং কিভাবে ভ্যাট সংগ্রহ কার্যক্রমকে অত্যন্ত সাবলীল ও করদাতাবান্ধব করা যায়, সে বিষয়ে তাদের উদ্ভাবন ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে। এবার ভ্যাট বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতাও শিক্ষার্থীদের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
চেয়ারম্যান বলেন, আয়কর মেলার মতো জানুয়ারি মাসে সব বিভাগে ভ্যাট মেলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ভ্যাটের বিভিন্ন খুঁটি-নাটি, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ে ধারণা দিতেই এ মেলা। অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে যেসব ব্যবসায়ীর ইসিআর কেনার সামর্থ্য নেই, তাদের বিনাশুল্কে আমদানিকৃত ও সরকার নির্ধারিত মূল্যে সরবরাহ করা হবে।
নতুন ভ্যাট আইনে ভ্যাট কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার অপব্যবহার সংকুচিত করা হয়েছে। ভ্যাট ব্যবস্থাপনা অনলাইনের কারণে ভ্যাট কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের দেখা হবে না। এর ফলে ভ্যাট খাতে অব্যবস্থাপনা দূর হবে, কাজের গতি বাড়বে। দুর্নীতির সুযোগ থাকবে না বলেও জানান তিনি।
প্যাকেজ ভ্যাট সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্যাকেজ ভ্যাটের আইনগত কোনো সমর্থন নেই। মুখে মুখে এ ডাক নাম চলে আসছে। যারা আন্দোলনে নামছেন, তাদের ওপর ভ্যাট নেই। এ বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে, চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৬
আরইউ/এএসআর