ঢাকা: অর্থ লেনদেনে প্রযুক্তি ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, এ সুযোগে ‘মোবাইল মানি’ অর্থপাচারের বড় হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সার্ক ফাইন্যান্স সেমিনার অন ইমপেক্টস অব মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ইন দ্য সার্ক রিজন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, মোবাইল মানির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে আর্থিক জালিয়াতি ও প্রতারণা। এটি প্রতিরোধে মোবাইল ফিন্যান্সসিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের একযোগে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহকদের তথ্য তুলে ধরে ফজলে কবির বলেন, ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী- দক্ষিণ এশিয়ায় এ খাতে ১০ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক আছেন। যার মাত্র ২৫ শতাংশ সক্রিয়। আর বাংলাদেশে লাইসেন্সপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৮টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিয়ে আসছে। বর্তমানে দেশে ১৩ কোটি মোবাইল ফোন গ্রাহক আছেন। এর মধ্যে মাত্র ৩ কোটি ৯০ লাখ গ্রাহক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নিচ্ছেন।
সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটি গাইড-লাইন প্রণয়ন করেছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে ৬৮৯ দশমিক ৭৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়; যা ৬ লাখ ৭১ হাজার এজেন্ট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
তবে আর্থিক লেনদেনে ঝুঁকি এড়ানো সবসময়ের জন্য চ্যালেঞ্জ বলে তিনি মনে করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. বাকী খলিলী। সেমিনারে অর্থনীতিবিদ, বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও দেশ-বিদেশের মোবাইল ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক বাকী খলিলী বলেন, বিকাশের ব্যবসা কৌশল, ব্র্যান্ডিং, অবকাঠামো ও উন্নত নেটওয়ার্ক অন্যদের চেয়ে ভালো। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে হাতে হাতে পাঠানো বা নিজে বহন করার চেয়ে কম খরচ ও কম সময়ে লেনদেন হচ্ছে মোবাইলে। তবে এই ধারা আরও বাড়ানো উচিত।
বরিশালের ৪৩ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফাইন্যান্সিং করছে বলেও জানান তিনি।
সেমিনারে সার্কের আওতাধীন দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা তাদের দেশের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৬
এসই/আইএ