ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘এই মুহূর্তে কাজে যোগ দিন, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
‘এই মুহূর্তে কাজে যোগ দিন, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা’

পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন ছেড়ে এই মুহূর্তে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই মুহূর্তে কাজে যোগ দিন অন্যথায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা: পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন ছেড়ে এই মুহূর্তে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই মুহূর্তে কাজে যোগ দিন অন্যথায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

যারা আন্দোলন করছে তারা আন্দোলনের কারণ জানে না দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে কোনো দাবি নিয়ে আসা হয়নি।

 

শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে আগামী জানুয়ারি থেকে সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

সাভারের কিছু পোশাক কারখানায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের কর্মবিরতির কর্মসূচি চলাকালে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।  

শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বসে আলোচনা করেছেন জানিয়ে নেতারা আন্দোলনের কারণ জানে না বলে দাবি করেন মুজিবুল হক চুন্নু।

‘আমি শ্রমিক নেতৃবৃন্দের কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনারা কোনো ডিমান্ড দিয়েছেন কিনা? তারা বলেছেন, না আমরা ডিমান্ড দেয়নি। তাহলে তোমরা বের হচ্ছো কেন, তারা বলছে জানি না। নাজমা আক্তার, বাবুল আক্তারসহ অনেক শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানে না, বলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।

শ্রমিক আন্দোলনের পিছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি, যদি শ্রমিক ইউনিয়ন, ট্রেড ইউনিয়ন, ট্রেড ফেডারেশন এই আন্দোলন সম্পর্কে না জানে, তাহলে এটা কারা করছে? আমাদে আশঙ্কা কোনো একটা গ্রুপ, কোনো পক্ষ থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের ক্ষতি করার জন্য এ কাজটা করছে। সেটা আমরা ক্ষতিয়ে দেখবো।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু কর্মবিরতির কোনো নোটিশ আগে ব্যক্তিগতভাবে, সাংগাঠনিকভাবে দেয় নাই, কোনো ফেডারেশন থেকে কোনো দাবি আসে নাই। ট্রেড ইউনিয়ন নেতারাও বলছেন তারা এ সম্পর্কে জানেন না। আমি শ্রমিক ভাইদের অনুরোধ করব, তারা যেন কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যান।

“তারা যদি কাজে না যান, তাহলে ১৯৫/১৯৬’র যে ধারা, আপনারা জানেন, যদি কোনো শ্রমিক অসদাচরণ করেন, অন্যায়ভাবে কোনো কর্মবিরতি পালন করেন নোটিশ না দিয়ে; তাহলে ১৩’র ১ ধারা অনুযায়ী মালিক সেই ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে পারেন। ১৩’র ১ ধারা অনুযায়ী বন্ধ করলে কোনো শ্রমিক তার প্রাপ্য-বেনিফিট পাবেন না। ১৩’র ১ যাতে না হয়, সে জন্য শ্রমিক ভাইদের বলবো আপনারা না বুঝে যে কাজটি করছেন, তা করবেন না। দয়া করে আজকে এই মুহূর্তে কাজে যোগদান করেন। ’

শ্রমিকদের কর্মবিরতি সম্পূর্ণভাবে অবৈধ এবং আইনগত কোনো ভিত্তি নেই উল্লেখ করে শ্রমিকদের সাংগাঠনিকভাবে দাবি-দাওয়া উপস্থাপনের আহ্বান জানান শ্রম প্রতিমন্ত্রী।

পোশাকখাতকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার এ ব্যাপারে কঠোর। এই সেক্টরে কোনো অন্যায় আবদার, পিছনের পথে যদি কিছু করা হয় তাহলে বরদাস্ত করা হবে না। অনুরোধের পরও কাজে না এলে আইনগতভাবে যা যা করার তাই করবো।

৪০-৫০টি কারখানায় আন্দোলন চলছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো শ্রমিক সংগঠন এর মধ্যে নেই। এর পিছনে কারা তাদের আমরা বের করবো। দেশে বিদেশে যে কেউ এ কাজটা করতে পারে বলে মনে করেন প্রতিমন্ত্রী।

সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও নিজস্ব সোর্স থেকে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

জানুয়ারি থেকে শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা
শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে আগামী জানুয়ারি থেকে কোনো পোশাক শ্রমিক কর্মস্থলে মারা গেলে ৫ লাখ টাকা, শ্রমিকের সন্তান মেডিকেল, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে ৩ লাখ টাকা, শ্রমিক অসুস্থ হলে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা, নারী শ্রমিক সন্তানসম্ভাবা হলে ২৫ হাজার টাকা সহায়তা করা হবে।

শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে ২৫ কোটি টাকা জমা হয়েছে, এ বছরে ৬০/৭০ কোটি টাকা হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে শ্রম সচিব মিকাইল শিপার উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬/আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।