জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিট বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এনবিআরসূত্রে জানা যায়, মোবাইল ফোন অপারেটরদেরকে (গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক, সিটিসেল) ২জি লাইসেন্সের আওতায় স্পেকট্রামের সর্বশেষ কিস্তির ভ্যাট বাবদ বিটিআরসির কাছে এনবিআর-এর পাওনা রয়েছে ২৬৯ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, ২০১৬ সালে থ্রিজি লাইসেন্সের ভ্যাট সঠিকভাবে পরিশোধ না করায় চলতি মার্চ মাসের ৭ তারিখে বিটিআরসির কাছে ১৬১ কোটি টাকার আরও একটি দাবিনামা পাঠায় এনবিআর।
এছাড়া এয়ারটেল ও রবি একীভূত হওয়ায় তারা বিটিআরসিকে পরিশোধ করতে হবে ৪৬০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত করলে অংকটা দাঁড়াবে ৫২৯ কোটি টাকা। রবি এরই মধ্যে ৩৭০ কোটি টাকা বিটিআরসিকে পরিশোধ করেছে। কিন্তু রবি এয়ারটেল-এর সঙ্গে একীভূত হওয়ায় ভ্যাট বাবদ এনবিআরকে বিটিআরসির ৬৯ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে । কিন্তু সেটা তারা করেনি। না করায় বিটিআরসির কাছে এই ৬৯ কোটি টাকা পাওনা এনবিআর-এর।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি’র) কাছে ৫১৯ কোটি টাকার রাজস্ব পাওনা হয়ে আছে এনবিআর-এর। এই পাওনা পরিশোধের জন্য বারবার তাগিদ দেবার পরও কোনো সাড়া মিলছে না। ফলে চলতি মার্চ মাসের ১ তারিখে বিটিআরসির ব্যাংক হিসাব জব্দ করার অনুমতি চেয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়েছে বৃহৎ করদাতা ইউনিট।
এ বিষয়ে বৃহৎ করদাতা ইউনিট মূসক-এর সহকারি কমিশনার মো.বদরুজ্জামান মুন্সি বাংলানিউজকে বলেন, বিটিআরসির কাছে টুজি ও থ্রিজি সার্ভিস চালুর জন্যে এনবিআরের বকেয়া পড়ে আছে ৪৭০ কোটি টাকা। আর রবি একীভূত হওয়ায় ভ্যাট বাবদ আরও বকেয়া রয়েছে ৬৯ কোটি টাকা। এই পাওনা পরিশোধের জন্য সরকারি এই সংস্থাটিকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও কর্ণপাত করছে না বিটিআরসি। সর্বশেষ চলতি মাসে বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবরে বিটিআরসির ব্যাংক হিসাব জব্দ করার অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান মহোদয় অনুমতি দিলেই জব্দ করা হবে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হিসাব বিভাগের সঙ্গে কথা না বলে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন সংস্থার সচিব মো. সরওয়ার আলম। বাংলানিউজের কাছে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্যও করতেও রাজি হননি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো.নজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিটিআরসির কাছে আমাদের অনেক বকেয়া পড়ে আছে। বকেয়া পরিশোধে বারবার তলব করা হলেও তারা বিষয়টি নিয়ে মোটেও আগ্রহী নন। শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠানে বকেয়া পড়ে থাকলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে ব্যর্থতার গ্লানি সইতে হয়।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বৃহৎ করদাতা ইউনিট থেকে বিটিআরসি’র ব্যাংক হিসাব জব্দ করার অনুমতি চেয়ে একটি চিঠি পাওয়া গেছে। আর এই চিঠি দেওয়া মানে এনবিআরকে অবহিত রাখা। তবে সরকারের বকেয়া রাজস্ব আদায়ে যেকোনো কমিশনার যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার ক্ষমতা রাখেন। কেননা এটা কমিশনারদের আইন-প্রদত্ত ক্ষমতা।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
এসজে/জেএম