ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাজেটে রুপপুরে রেকর্ড বরাদ্দ, বাস্তবায়নই চ্যালেঞ্জ

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০১৭
বাজেটে রুপপুরে রেকর্ড বরাদ্দ, বাস্তবায়নই চ্যালেঞ্জ

ঢাকা: পাবনার রূপপুরে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প রাশিয়ার সহযোগিতায় শুরু হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় এক লাখ ১৩ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯১ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে রাশিয়া। নতুন করে এ প্রকল্পে ভারতের কাছ থেকে ৭ হাজার ৫২০ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা পাওয়া যাবে।

প্রকল্পটি দৃশ্যমান করতে এবং প্রথম ইউনিটে ২০২৩ সালে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা চিন্তা করছে সরকার। এ লক্ষ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রকল্পে ২০ হাজার ৯৭৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বাজেটে একটি প্রকল্পের আওতায় এক অর্থবছরে এতো বিশাল অংকের টাকা বরাদ্দ দেওয়া এটিই প্রথম। বাংলাদেশের ইতিহাসে বাজেটে একটি প্রকল্পে এ বিশাল অংকের বরাদ্দ কখনও দেওয়া হয়নি।
 
গত বাজেটে এ প্রকল্পে ১৩ হাজার ৯৭ কোটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিলো। ফলে বছরের ব্যবধানে ৭ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।   অতিরিক্ত ব্যয়ের সমান বরাদ্দ পদ্মাসেতু প্রকল্পেও দেওয়া হয়নি।   পদ্মাসেতু প্রকল্পে ৫ হাজার ৫২৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

১ হাজার ৬২ একর জায়গায় বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ পর্ব পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর এখন চলছে দেওয়াল নির্মাণসহ বাকি অবকাঠামোগত কাজ। মাটি ভরাটের কাজও শেষ পর্যায়ে। এখন শুরু হবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে মূল প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ।

তবে বাজেটে শুধু বরাদ্দই দিলে হবে না, সঠিক সময়ে বাস্তবায়নই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাজেটে বরাদ্দ দিলেই দায়িত্ব শেষ হবে না। সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে যেভাবে দেখছি, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি ভালো নয়। বিশাল বাজেটের প্রকল্পের বাস্তবায়নের গতি দক্ষতার সঙ্গে বাড়াতে হবে। বাজেটে বেশি বরাদ্দের চেয়ে প্রকল্পটির বাস্তবায়নই বড় চ্যালেঞ্জ’।
 
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাশিয়ার প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে কেন্দ্রটির মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ৫০ অর্থবছর। এ সময়কালে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দু’টি  ইউনিটে প্রতি বছর ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট করে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। বিদ্যুতের খরচ পড়বে ইউনিটপ্রতি মাত্র ৩ টাকা।

আগামী সেপ্টেম্বর মাসেই প্রকল্পের মূল প্ল্যান্ট নির্মাণ শুরু হওয়ার কথা। প্রথম ইউনিটে ২০২৩ সালে ও দ্বিতীয় ইউনিটে ২০২৪ সালের অক্টোবরে উৎপাদন শুরুর সময়সীমা ধরা হয়েছে। সঠিক সময়েই ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে পারবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।
 
প্রকল্পের পরিচালক ড. শওকত আকবর বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুসারেই তারা কাজ করছে। সেপ্টেম্বর মাসে পারমাণবিক বিদ্যৎকেন্দ্রের কাঙ্খিত কার্যক্রম শুরু হবে। যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছি, নির্দিষ্ট সময়ে সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। বাজেটে বরাদ্দের অর্থ দক্ষতারই সঙ্গে ব্যয় করা হবে’।
 
বাংলাদেশ সময়:  ২১৩৫ ঘণ্টা,  জুন ০৩, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।