ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যাংকের পরিচালকরা লুটপাট করছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১০ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৭
ব্যাংকের পরিচালকরা লুটপাট করছে ব্যাংকের পরিচালকরা লুটপাট করছে

ঢাকা: ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টররা (পরিচালক) ব্যাংক লুটপাট করে খাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে কাকরাইলের ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের কার্যালয়ে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
 
গোলাম রহমান বলেন, বর্তমানে ব্যাংকে সবচেয়ে সুদ কম।

বড়জোর বেশি হলে ৪ বা ৫ শতাংশ সুদ হবে। আগে থেকেই ব্যাংকে টাকা রাখলে ৫শ টাকা দিতে হতো আর এখন একটু বাড়িয়ে ৮শ টাকা দিতে হবে। কিন্তু ব্যাংকে টাকা রাখলে আমার টাকা কমছে নাকি বাড়ছে। প্রথমত আমার টাকা ভাড়া দেওয়া হচ্ছে, এরপর লাভ থেকে কর্মচারীদের বেতন আর শেষে আমায় লাভ দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ব্যাংকের পরিচালক ব্যাংক লুটপাট করে খাচ্ছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থায় নেওয়া হচ্ছে না।
 
স্বস্তি চাই, সমৃদ্ধি চাই না মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, আমরা ভোক্তারা স্বস্তি চাই কোনো সমৃদ্ধি চাই না। কেননা সমৃদ্ধির নামে যদি গুন নষ্ট হয় তাহলে এমন সমৃদ্ধি আমাদের কোনো দরকার নেই। অপরদিকে গ্রামের মানুষ তথা সবার প্রিয় চা। আগে এই পানীয়টিতে ৪ শতাংশ ভ্যাট ছিলো নতুন আইনে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। যা কখনো কাম্য নয়। এছাড়া টুথপেস্ট ও সাবানের উপর যে ডিউটি ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে এটাও কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।  
 
গোলাম রহমান আরও বলেন, জনগণ ভ্যাট ফাঁকি দেয় না বরং ব্যবসায়ীরা ভ্যাট ফাঁকি দেয়। জনগণ ঠিকই ভ্যাট দিচ্ছে কিন্তু ব্যবসায়ীরা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে সেটা জমা দিচ্ছে না। এজন্য ব্যবসায়ীদের ধরতে হবে যেন কোনোভাবেই জনগণের থেকে নেওয়া ভ্যাট ফাঁকি দিতে না পারে। অন্যদিকে নতুন ভ্যাট আইনে বলা হয়েছে, সব পণ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। আবার প্রস্তাবিত বাজেট উস্থাপনের পর থেকে জনমনে ভীতির জন্ম দিয়েছে। এজন্য প্রয়োজনে বাজেট সংশোধন বা জনবান্ধব করনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
 
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, নতুন ভ্যাট আইনটি আমি নিজেও বুঝিনি। আমি যদি না বুঝি তাহলে প্রত্যান্ত মানুষ কিভাবে এই আইনটি বুঝবে? নতুন ভ্যাট আইনে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের কারণে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়বে। এমনকি বিদ্যুৎ বিভাগও নতুন আইনটি সম্পর্কে ভালো জানে না। আইওসির কাছ থেকে যে দামে গ্যাস কেনা হচ্ছে সরকার সেখানে ভর্তুকি দিচ্ছে। এমনকি ২টাকা করে পারকিউবিক মিটারে সরকার লোকসান দিচ্ছে। অর্থাৎ সরকার লোকসান দিয়েই যাচ্ছে।
 
তিনি আরও বলেন, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। আর কোনোদিন বাজার নিয়ন্ত্রণ থাকবেও না। যদি বাজারই নিয়ন্ত্রণ না থাকে তাহলে জনগণের উপর এতো বেশি চাপ বাড়িয়ে কি লাভ। এতে সামনের নির্বাচনের উপর প্রভাব পড়বে। অপরদিকে আমাদের অর্থমন্ত্রী ব্যাংক থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা চুরি হলে বলেন, এটা কোনো টাকা নয়। কিন্তু ভ্যাট ১ শতাংশ কমলে বলেন রাজস্বের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। এটা কখনো কাম্য নয়।
 
সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, নতুন আইনটি পুরোপুরি ব্যবসা বান্ধব। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেয়ে আমাদের বেশি সুবিধা আছে। গার্মেন্টস শিল্পকে সহযোগিতা করার জন্য বিশ্বের বুকে আজ আমরা দ্বিতীয় স্থানে আছি। এখানে এনবিআরের অবদান আছে। এছাড়া নতুন আইনে দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা ও রপ্তানি ব্যবসাকে আরও সমৃদ্ধ করতে এনবিআর কাজ করে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
 
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, এনবিআর সদস্য (মূসক নীতি) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, বৃহৎ করদাতা ইউনিটের কমিশনার মতিউর রহমান প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৭ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৭
এসজে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।