ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিমা খাতের মুনাফা ২৩৪ কোটি টাকা

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
বিমা খাতের মুনাফা ২৩৪ কোটি টাকা বিমা কোম্পানির লোগো।

ঢাকা: চলতি বছরের তিন প্রান্তিকের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৫টি বিমা কোম্পানি। এর মধ্যে ৩৪ কোম্পানির প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ২৩৪ কোটি টাকা। আর এ সময়ে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের লোকসান হয়েছে দেড় কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে বিনিয়োগের স্থিতিশীল পরিবেশ থাকায় পলিসির হার বেড়েছে। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে বিমা কোম্পানির ভালো মুনাফা আসায় গত বছরের এই সময়ের চেয়ে মুনাফার হার বেড়েছে।

কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর তৃতীয় প্রান্তিকে নিট মুনাফা হয়েছে ৬১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে এই সময়ে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির লোকসান হয়েছে ১ লাখ টাকা।

গত ৯ মাসে সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুনাফা হয়েছে রিলাইয়েন্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের। এর মধ্যে কোম্পনিটির সর্বশেষ প্রান্তিকে ৪ কোটি ৬২ লাখ ৬০ হাজার এবং ৯ মাসে মুনাফা হয়েছে ২৬ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার। ফলে মুনাফা বৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে এই কোম্পানিটি।

এ সময়ে মুনাফার দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির এই সময়ে মুনাফা হয়েছে ১৫ কোটি ৪৯ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর তৃতীয় প্রান্তিকে ৩ কোটি ৯৪ লাখ ১০ হাজার টাকা মুনাফা হওয়ায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাইওনিয়ার।

পক্ষান্তরে, ৯ মাসে ১২ কোটি ৬২ লাখ ১০ হাজার টাকা মুনাফা হওয়ায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। আর ৪ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা মুনাফা হওয়ায় কোম্পানিটি তৃতীয় প্রান্তিকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

এ সময়ে ১১ কোটি ৬৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা মুনাফা হওয়ায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটির সর্বশেষে প্রান্তিকে মুনাফা হয়েছে ৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

গত ৯ মাসে ৭ কোটি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা মুনাফা হওয়ায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। গত তিন মাসে ৩ কোটি ২ লাখ ১০ হাজার মুনাফা হওয়ায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে কোম্পানিটি।

তৃতীয় প্রান্তিকে ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা মুনাফা হওয়ায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। ওই সময়ে ৬ কোটি ৮২ লাখ ৯০ হাজার টাকা মুনাফা অর্জন করে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে কোম্পানিটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিবেদনে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা হয়েছে ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এছাড়া ফনিক্স ইন্স্যুরেন্সের ৯ কোটি ১০লাখ, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের ৮ কোটি ১২ লাখ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৮ কোটি ৪ লাখ, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ৭ কোটি ৫৫ লাখ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৭ কোটি ৫১ লাখ, নর্দান জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৭ কোটি ৪৩ লাখ, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৬ কোটি ৯২ লাখ, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের ৬ কোটি ৮৫ লাখ, নিটল ইন্স্যুরেন্সের ৬ কোটি ৪১ লাখ, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের ৫ কোটি ৮৪ লাখ, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৫ কোটি ৬৭ লাখ, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ৫ কোটি ৬৩ লাখ, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের ৫ কোটি ৩৫ লাখ এবং রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে।

একই সময়ে তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা হয়েছে ৪ কোটি ৮৪ লাখ, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ৪ কোটি ৭৯ লাখ, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের ৪ কোটি ৪৮ লাখ, প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ৪ কোটি ২৮ লাখ, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ৩ কোটি ৯০ লাখ, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ৩ কোটি ৮৩ লাখ, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের ৩ কোটি ৪৮ লাখ, জনতা ইন্স্যুরেন্সের ২ কোটি ৪৬ লাখ, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের ২ কোটি ৩ লাখ এবং প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে।

এদিকে তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ২ কোটি টাকার বেশি মুনাফা হয়েছে পিপলস, ইস্টার্ন, ফনিক্স, সেন্ট্রাল, ঢাকা এবং সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্সের।  

একই সময়ে ১ কোটি টাকার বেশি মুনাফা অর্জন করেছে অগ্রণী, বাংলাদেশ জেনারেল, ইউনাইটেড, ইস্টল্যান্ড, মাকেন্টাইল, প্রভাতী, নিটল, সোনার বাংলা, রিপাবলিক এবং তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স।

আর ১ কোটি টাকার নিচে মুনাফা হওয়া কোম্পানিগুলো হচ্ছে- জনতা, কর্ণফুলী, ফেডারেল, পূরবী জেনারেল, প্রগতি, প্রাইম, প্যারামাউন্ট, কন্টিনেন্টাল,স্ট্যান্ডার্ড এবং নর্দান জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতি বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে বিমা খাতেও। এছাড়া শেয়ার বাজারেও বিনিয়োগ থাকায় সেখান থেকেও মুনাফা এসেছে।  

‘এতে বিমা খাতের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা বেড়েছে, তেমনি সার্বিক অগ্রগতিও বেশ ভালো। গ্রাহকের আস্থা যতো বাড়বে বিমা খাতও এগিয়ে যাবে। ’
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৭
এমএফআই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।