ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘১৩০ ট্যাকায় পিঁয়াজ কিনা তো আর খাইতে পারি না’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
‘১৩০ ট্যাকায় পিঁয়াজ কিনা তো আর খাইতে পারি না’ কারওয়ানবাজারের পেঁয়াজের আড়ত

ঢাকা:  ১৩০ ট্যাকায় পিঁয়াজ কিনা তো আর খাইতে পারি না। ইন্ডিয়ানডিও ৯০ ট্যাকা, দ্যাশাল ১৩০। ১৩০ ট্যাকা দাম হলে পিঁয়াজ না এর ছুবড়া খাওয়া লাগবো। কয়দিন পরে তো তাও পাবো না। একটু ভাঁজি-ভুঁজি ভুনা-টুনা খাই।সংসারে মাসে পিঁয়াজ লাগে ৫ কেজি’।

মঙ্গলবার (ডিসেম্বর ১২) সকালে আগারগাঁওয়ের বিএনপি বস্তি কাঁচাবাজারে বাড়তি দামে পেঁয়াজ কেনার সময় এভাবেই বাংলানিউজের নিকট ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় একটি চায়ের দোকানের মালিক লিপি আরা খাতুন। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫ জন।

ছোট একটা চায়ের দোকান থেকে আসা আয়ই পরিবারের একমাত্র আর্থিক উৎস। প্রতিমাসে বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে দিশেহারা পরিবারটি।

লিপি খাতুন বলেন, চালের দাম বাড়তি। এর উপরে পেঁয়াজ। ছোট চায়ের দোকানের আয়ে সংসার চলে না। ’

মঙ্গলবার বিএনপি কাঁচাবাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। প্রতিকেজি ভারতের মোটা নাসিক পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে।

পেঁয়াজের দাম বাড়তি প্রসঙ্গে খুচরা বিক্রেতা সহিদুল বলেন, নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ না উঠলে দাম কমবে না। আমরা কি করবো? পাইকারিতে বাড়তি দামে কিনি বিক্রিও করি বাড়তি দামে। ’

কারওয়ানবাজারের পাইকারি বাজারেও পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বি। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১২০ এবং ভারতের পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চাহিদার তুলনায় দেশে পেঁয়াজ সংকট ও বৃষ্টিকে দুষছেন বিক্রেতারা।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সপ্তাহ হলো পেঁয়াজের দাম কমে না। চাহিদার তুলনায় মার্কেটে মাল (পেঁয়াজ) আমদানি কম। কাঁচা পেঁয়াজ না উঠলে দাম কমবে না। এই পেঁয়াজ উঠতে ১৫ দিন সময় লাগবে। তার পরও মুড়িকাটা পেঁয়াজেও বাজার নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি আসবে না। চৈত্রমাসে দেশে ফের পেঁয়াজ উঠবে। সেটা হবে দীর্ঘ মেয়াদী। এর পরই কমবে পেঁয়াজের দাম। ’

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারেও পেঁয়াজের দাম বাড়তি। বর্তমানে বাজারে ভারতের পেঁয়াজের আমদানি বেশি। দেশি পেঁয়াজ রয়েছে স্বল্প পরিসরে তবে দাম বাড়তি। শ্যামবাজারে পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ মানভেদে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ স্বল্প পরিমাণে উঠেছে। তাও প্রতিকেজি ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শ্যামবাজারের পবিত্র ভাণ্ডারের মালিক সঞ্জীব সাহা বাংলানিউজকে বলেন, শ্যামবাজারে দেশী পেঁয়াজের সংকট। ভারতেও পেঁয়াজের দাম বাড়তি। দেশি পেঁয়াজ না উঠলে দাম কমবে না। চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজ শর্ট। নেপালি ও বার্মিজ পেঁয়াজও আমদানি হচ্ছে না। বাজার এখন ভারত নির্ভর। ভারতেও দাম বাড়তি। ’

তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। এরপরেই কমে যাবে দাম। এর আগে কারোর কিছু করার নাই কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে কয়েকগুণ বেড়েছে দাম।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী সফিউল হক বাংলানিউজকে বলেন, পেঁয়াজ ধরে রাখা যায় না এটা পঁচনশীল। আমরা বাজার মনিটারিং করছি সব সময়। পেঁয়াজ কেউ মজুদ করেনি। শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিক বাজারেও তিন থেকে চারগুণ দাম বাড়তি। আশা করছি জানুয়ারি ‍মাসের প্রথম সপ্তাহে দাম কমবে এর আগে কারোর কিছু করার নাই। তবে আমরা তৎপর আছি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
এমআইএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।