ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রচুর পেঁয়াজ আসছে, চিন্তার কিছু নেই

এস এম এ কালাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২১
প্রচুর পেঁয়াজ আসছে, চিন্তার কিছু নেই

ঢাকা: ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে, জানুয়ারি মাস পর্যন্ত আমদানি অব্যাহত থাকবে। তাই পেঁয়াজ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

রোববার (১০ অক্টোবর) টিসিবি পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এ পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, প্রতিদিনই বন্দরে পেঁয়াজ আসছে। গতকাল ১ হাজার টন, আজ ৯০০ টন পেঁয়াজ এসেছে তুরস্ক থেকে। ভোক্তাদের সুবিধার্থে এই আমদানি অব্যাহত থাকবে।

টিসিবি পরিচালক আরও বলেন, তুরস্ক, ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আসছে। ক্রেতারা যাতে কম দামে টিসিবি থেকে পেঁয়াজ নিতে পারেন, এ জন্য আমরা ট্রাকে বরাদ্দ বাড়িয়েছি। এখন থেকে প্রতি ট্রাকে ৭০০ কেজি করে পেঁয়াজ বরাদ্দ দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।

দেশে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই দাবি করে ক্রেতাদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

এদিকে রোববার মিরপুরের বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে। দোকানিরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজের দাম বেড়ে ৮০ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে। দাম কমার কোনো খবর তাদের জানা নেই।

শেওড়াপাড়ায় খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা আবদুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, আড়তে পেঁয়াজের দাম কমার কোনো খবর নেই। আগে পেঁয়াজ একদিন এনে তিনদিন বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন কম পরিমাণে এনে দিনে দিনে বিক্রি করার চেষ্টা করি।

তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজের ক্রেতাও কম, দাম বাড়ায় ক্রেতারা পরিমাণে কম কিনছেন। পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে বলেও অনেকে ধারণা করছেন বলে আশঙ্কা করছেন এই খুচরা বিক্রেতা।

অপরদিকে, পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হওয়ার পরও অসাধু ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে অস্থির পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে সোমবার (১১ অক্টোবর) স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলেছে, প্রতি বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৮ লাখ টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদন হচ্ছে ৩৩ লাখ টন। সংরক্ষণের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হলেও, বাকি থাকে ২৩ লাখ টন। আর প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। ফলে চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ সবসময় উদ্বৃত্ত থাকে। বর্তমানে কৃষকের কাছে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে, যা দিয়ে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত চলা যাবে। কিন্তু ভারতে বৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কিন্তু এটা কেন বাড়বে। এ বছর পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হয়েছে। দাম বাড়লে ভারতের পেঁয়াজের দাম বাড়বে। দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ার কথা নয়। মূলত অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের জন্য পেঁযাজের বাজারে এই অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

পেঁয়াজের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, কী এমন হয়ে গেল যে, হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেল। সাত দিনের ব্যবধানে দাম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়াটা সরকারের মনিটরিংয়ের চরম ব্যর্থতা বলে মনে করেন ক্রেতারা।

শেওড়াপাড়ায় বাজার করতে আসা রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এটা সরকারের ব্যর্থতা। যখন কেজিতে ১০ টাকা বাড়লো তখনই দাম নিয়ন্ত্রণের দরকার ছিল। কিন্তু দাম দ্বিগুণ হওয়ার পর বৈঠক ডাকা হয়। অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেয়ে ব্যবসা করে নিয়েছেন। এখনই লাগাম টেনে ধরতে হবে, তা না হলে দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটাই দেখার বিষয়!

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২১
এসএমএকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।