ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এসক্রো সিস্টেমের প্রতি ক্ষোভ ই-কমার্স গ্রাহকদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২১
এসক্রো সিস্টেমের প্রতি ক্ষোভ ই-কমার্স গ্রাহকদের মানববন্ধন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: এসক্রো সিস্টেমের নামে ই-কমার্স গ্রাহকদের হয়রানি বন্ধ করাসহ সাত দফা দাবিতে সোমবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যৌথভাবে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ই-কমার্স কাস্টমার অ্যাসোসিয়েশন ও কিউকম কাস্টমার অ্যাসোসিয়েশন।

মানববন্ধনে গণমাধ্যম কর্মীদের বাংলাদেশ ই-কমার্স কাস্টমার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবিদ খান বলেন, গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এসক্রো সিস্টেম চালু করা হলেও এটিই এখন গ্রাহক ভোগান্তির মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসক্রো সিস্টেমকে অটোমেটিক এবং ডিজিটাল করতে হবে। প্রয়োজনে এসক্রো সিস্টেম ড্যাশবোর্ডে কাস্টমার, মার্চেন্ট, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান, পেমেন্ট গেটওয়ে, ব্যাংক সবার এক্সেস দিতে হবে। ই-কমার্সে চলমান অস্থিরতা নিরসন এবং নিরাপদ ই-কমার্স পরিচালনার জন্য কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান বন্ধ না করে আইনি কাঠামোর মধ্যে এনে ব্যবসা করার সুযোগ দিতে হবে।

মানববন্ধনে আসা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী পঞ্চাশোর্ধ্ব মোস্তাক হোসেন জানান, নিজের পেনসনের ১১ লাখ টাকা দিয়ে দশটি পালসার বাইক অর্ডার করেছিলেন কিউকমে। সেই টাকাটা এখন আটকা রয়েছে পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেম ফ্রস্টারে। এই টাকা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমিসহ অন্যান্য গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

দুই বাইকের দুই লাখ টাকা আটকে রাখার কথা জানিয়ে নুর আলম রতন নামে আরেক গ্রাহক বলেন, মিডিয়ায় এসেছে পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান ফ্রস্টার বলেছে কিউমের টাকা তাদের কাছে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমতি দিলে এই টাকা গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এখন আমরা চাই বাংলাদেশ ব্যাংক দ্রুত টাকাটা আমাদের ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক।

মানববন্ধনে দুই অ্যাসোসিয়েশনের দাবিগুলো হচ্ছে- কোনো ই-কমার্স বন্ধ নয় আইনি কাঠামোর মধ্যে এনে ব্যবসা করার সুযোগ দিতে হবে, কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গ্রাহক যে মাধ্যমে পেমেন্ট করেছে সে মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমপরিমাণ টাকা ৩/৪ কার্যদিবসের মধ্যে গ্রাহকের পেমেন্টকৃত টাকা ফেরত দিতে হবে।

এছাড়া কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে গ্রাহকদের পেমেন্টকৃত টাকা গেটওয়েতে (গ্রাহক) Claim করলেই ফেরত দিতে হবে। এক্ষেত্রে ওই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অনুমতির প্রয়োজন নেই। এছাড়া বর্তমানে যে-সব গ্রাহকের টাকা পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকানো আছে, সেই টাকাগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি দিয়ে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ফেরত দেওয়া হোক।

যদি কোনো কারণে ই-কমার্সের পেমেন্ট গেটওয়েগুলো গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ করে অথবা সেবা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে। পুরাতন যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আছে নতুন পুরাতনসহ সব পেন্ডিং অর্ডার ডেলিভারি করার জন্য সরকারের কঠোর নজরদারির আওতায় রেখে ব্যবসা এবং ডেলিভারি করার সুযোগ দেওয়া হোক।

কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যদি নতুন করে বিজনেস করতে আসে সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক পরিধির ওপর ভিত্তি করে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে। অথবা ডিসকাউন্ট ভ্যালু সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে। এসক্রো পদ্ধতিকে অটোমেটিক এবং ডিজিটাল করতে হবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে৷ প্রয়োজনে এসক্রো সিস্টেমের ড্যাশবোর্ডে কাস্টমার, মার্চেন্ট, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান, পেমেন্ট গেটওয়ে, ব্যাংক সবার এক্সেস দিতে হবে বলেও এসময় দাবি করে তারা।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ ই-কমার্স কাস্টমার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জুবায়ের আহমেদ হৃদয়, কিউকম কাস্টমার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জেসি আলম হৃদয়, সাধারণ সম্পাদক আলামিন আহমেদসহ প্রায় শতাধিক ভুক্তভোগীসহ ই-কমার্স গ্রাহকরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২১
এইচএমএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।