ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য এফটিএ এফটিএ (মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি) সই করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, এফটিএ সইয়ের বিষয়ে উভয় দেশের আলোচনা অনেক এগিয়ে গেছে, মালয়েশিয়া এগিয়ে এলে এ চুক্তি সই করা সম্ভব। এতে করে উভয় দেশ উপকৃত হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে সফররত মালয়েশিয়ার প্ল্যান্টেশন, ইন্ডাস্ট্রি এবং কমোডিটি বিষয়ক মন্ত্রী দাতুক হাজাহ জুরাইদা বিনতে কামারুদ্দিনের নেতৃত্বে আগত ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক, পাটজাত পণ্য, প্লাস্টিক, হালকা যন্ত্রপাতি ও চামড়াজাত পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করছে। বাংলাদেশ ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৩০৬.৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করেছে, একই সময়ে ১,৫৭৬.৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। মালয়েশিয়ার পাম ওয়েল, ফার্নিচার, চকলেট, ফলমূলসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে। মালয়েশিয়া বাংলাদেশে এসব পণ্যের কারখানা স্থাপন করলে অধিক লাভবান হবে। এখানে প্রচুর দক্ষ জনশক্তি রয়েছে, ফলে কম খরচে এসব পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মালয়েশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ পাম্পওয়েল আমদানি করে থাকে। চলমান ভোজ্যতেলের বিশ্ব মূল্য পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়া পাম্পওয়েলের মূল্য কমালে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ থাকবে। বাংলাদেশের ফার্নিচার শিল্প দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত রাজ্যগুলোতে প্রচুর ফার্নিচারের চাহিদা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একশতটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে, অনেকগুলোর কাজ প্রায় শেষের পথে। এখানে মালয়েশিয়া ফার্নিচার, কৃষিপণ্য প্রসেসিংসহ সংশ্লিষ্ট শিল্প খাতে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে করছে।
সফররত মালয়েশিয়ার প্ল্যান্টেশন, ইন্ডাস্ট্রি এবং কমোডিটি বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার বন্ধু রাষ্ট্র এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার। উভয় দেশের চলমান ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে মালয়েশিয়ার ফার্নিচার, রাবার জাত পণ্য, চকলেট ও শুকনো খাদ্যপণ্যের চাহিদা বাংলাদেশে রয়েছে। উভয় দেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করতে পারে। মালয়েশিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ও অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) নূর মো. মাহবুবুল হক এবং আগত প্রতিনিধি দলের মালয়েশিয়ার ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মাদ জায়েদি বিন মোহা. কারলি, ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি (ইন্টারন্যাশনাল) মিসেস জাইমে ইয়াহ, মালয়েশিয়া পাল্মওয়েল বোর্ড এর ডিরেক্টর জেনারেল দাতুক ডা. আহমদ পারভেজ বিন গোলাম কাদির, মালয়েশিয়ার পাম্পওয়েল কাউন্সিল এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মিসেস আজরিয়াহ বিনতে আজিয়ান, মালয়েশিয়ার টিম্বার কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান মিসেস নোরিদা বিনতে ইউসুফ, মালয়েশিয়ার রাবার বোর্ডের ডিরেক্টর জেনারেল দাতো জাইরোসানি বিন মোহা. নূর, মালয়েশিয়ার টিম্বার কাউন্সিলের পরিচালক খায়রুল বিন আনোয়ারসহ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২
জিসিজি/আরআইএস