ঢাকা: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামলে ভোজ্যতেলের দাম কমবে বলে মনে করেন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান। একই সঙ্গে যুদ্ধের পর অনেক মিলমালিক নিঃস্ব হয়ে পথে বসবে বলেও আশঙ্কা করছেন তিনি।
সোমবার (০৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভোজ্যতেলের বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান।
এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব এ এস এম শফিকুজ্জাম, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
ফজলুর রহমান বলেন, আমার শারীরিক অবস্থা ভালো না, তারপরেও এসেছি। গত ৫ মে বৃহস্পতিবার বাণিজ্যসচিব সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন তেলের দাম ৩৮ টাকা বাড়ানোর বিষয়ে। মাঝে শুক্র-শনিবার বন্ধ ছিল ব্যাংক। রোববার ব্যাংক খোলা, আমাদের ডিলার বা দোকানদার টাকা পাঠানোর পর ডিউ ইস্যু করবো। এ কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারি সেজন্য সার্বিকভাবে আমাদের টিমকে ট্রান্সপোর্ট, সাপ্লাই, ডেলিভারির জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।
সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, তেলের দাম যখন কম তখন সরকার যদি ৫-৭ লাখ টন মাল কিনে এনে রেখে দেয়। আর বাজার যখন ঊর্ধ্বমুখী হবে তখন সরকার তার স্টক থেকে কিছু মাল রিফাইনারিকে দিয়ে দেয়, তাহলে বাজার স্থিতিশীল থাকে। এসব পরামর্শ আমরা চাচ্ছি।
তিনি বলেন, ৩৮ টাকা তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, সিদ্ধান্ত হয়েছে ১৯৮ টাকা, যেটি গত ৫ তারিখে নির্ধারিত হয়েছে। আজকে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম আছে ২ হাজার ৫০ ডলার টন। গত শুক্রবার এই দামে ক্লোজ হয়েছে। সেটার কস্টিং অ্যাভারেজ করলে ২২২ টাকা লিটার প্রতি দাম পড়ে। বাড়ানোর সময় খুব মন্থর গতিতে বাড়ে, এটা ব্যবসার ধর্ম। যখন কমে সেটা মিল মালিকদের ওপর এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের ওপর পড়ে। ১৯৮ টাকায় লিটার প্রতি তেলের দাম ধার্য করা হয়েছে, এটা যদি সোমবার কমে থাকে তাহলে এমনিতেই দোকানদাররা কম দামে কিনবে। কারণ এক সপ্তাহে ২০০ ডলার কমেছে পাম তেলের দাম, ১৯৫০ ডলার থেকে ১৭৫০ ডলারে নেমেছে। এটি কেউ কেনে না, কারণ আরও কমে যায় কিনা।
সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান আরও বলেন, যুদ্ধের ডামাডোল কমে গেলে তেলের দাম আরও অনেক টাকা কমে যাবে। ৫০০ ডলার কমবে, এতে অনেক মিল মালিক পথে বসে যেতে পারে!
তিনি বলেন, তেলের দাম শুক্রবার থেকে বাড়ানো হয়েছে। অথচ তেল নেই, দোকানদাররা তেল সরিয়ে রেখেছে। সেটার জন্য তো মিল মালিক দায়ী নয়। আর আজকে মিলমালিকরা জবাবদিহি করছেন। কিন্তু যারা তেল কেনেন তারা আন্তর্জাতিক বাজারে কার কাছ থেকে কিনছেন, কে বিক্রি করছে, তারা শুধু কোম্পানির পরিচয়টাই জানে।
ফজলুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কীভাবে কিনবো, কত টাকায় কিনবো, সার্বিক খরচ কত, সেটি বোতলের গায়েই লেখা আছে। এটি কেউ মুছে দিলে জবাবদিহি করতে হবে। আমি তথ্য চেয়ে সাহায্য চেয়েছি। আমরা কীভাবে সমন্বয় করে এগিয়ে যেতে পারি। আমি মন্ত্রীকে বলেছি, যখন যে কাজে লাগে আমাকে ডাকবেন। আমরা পাশে আছি। আমাদের পয়সার প্রয়োজন আছে সবার। তবে আগামী জেনারেশন যাতে ভালো ব্যবসায়ী হয় সেটি দেখছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ