ঢাকা: ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশে সরিষা ও ধানের তুষের (রাইস ব্রান) তেলের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার (১৮ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্স কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে তিনি এ কথা জানান।
তিনি আরও জানান, শুধু ধানের তুষ রফতানি বন্ধ করে বছরে ৭ লাখ টন তেল উৎপাদন সম্ভব।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রাইস ব্রান থেকে আমাদের চাহিদার ২৫ শতাংশ পাওয়া যাবে। বর্তমানে আমরা পাচ্ছি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন৷ রাইস ব্রান তেলের সুবিধাগুলো মানুষকে জানাতে হবে।
সভায় বাণিজ্যসচিব তপান কান্তি ঘোষ, দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সম্পর্কিত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি ছাড়াও এফবিসিসিআইসহ খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা গত ৫ মে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম। আমদানিকারকরা বলেছে সাপ্লাই, পাইপ লাইন, এলসি ও দেশে যা আছে সেটা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ঠিক আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে আমাদের, চিন্তার কোনো কারণ নেই। সব সাপ্লাই ঠিক আছে।
তিনি বলেন, আলোচনায় একটা কথা এসেছে- কোথাও কোথাও দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার গিয়ে জরিমানা করছে। ভোক্তা অধিকার শুধুমাত্র সেসব জায়গাতেই জরিমানা করেছে যেগুলো পূর্বের মজুদ করা, যেটা দাম লেখা আছে ১৬০ টাকা। সেটা কমে এসেছে। আমরা চাই না বাজারে ভয়ভীতি সৃষ্টি করা। মিলিতভাবেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক হয়ে গেছে, সমস্যার কিছু নেই।
আমরা কি শুধু সয়াবিন বা পামওয়েলের ওপর নির্ভর করবো কি না প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের দেশে তেলের দাম বেড়েছে। প্রতিনিয়তই দাম বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা বিকল্প বাজারে যাব না। দেশেই সরিষা ও রাইস ব্রান তেলের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করব। আমরা যদি অনেক চাপ দেই তাহলে রাইস ব্রান থেকে ৭ লাখ টন তেল উৎপাদান সম্ভব। রাইস ব্রান রফতানি বন্ধ করার বিষয়ে চিন্তা করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, এর দাম কেমন হবে। বেশি হলে চলবে না। কাছাকাছি থাকতে হবে।
টিপু মুনশি বলেন, ক্রাইসিস হলে ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। বৈশ্বিক এই ক্রাইসিসকে মিলিতভাবে মোকাবেলা করতে হবে। আমরা ক্যানোলা তেলের কথা বলেছি। দাম যদিও একটু বেশি। যদি ডিউটি ক্ষেত্রে কিছু করা যায়, দাম সমান সমান রাখা যায়, তাহলে বিকল্প একটা সোর্স হবে। শরীরের জন্য উপকারি একটা তেল পাওয়া যাবে।
এছাড়া কৃষি মন্ত্রণালয় বলেছে যদি বিশাল পরিমাণ জমি পাওয়া যায়, সেখানে আমরা সরিষা চাষ করি। সেখান থেকে আমাদের তেল আসতে পারে। নতুন নতুন পথ খোঁজার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে বিদেশি নির্ভরতা কমানোরও চেষ্টা করছি।
তেলের দাম নিয়ে টিপু মুনশি বলেন, সর্বজন স্বীকৃত একটি মেথড আছে সেভাবে আমরা করি। এটা একটা ওপেন বাজার যেখানে আন্তর্জাতিক বাজার, ট্রান্সপোর্ট, ডিউটি এগুলো নিয়ে বৈজ্ঞানিক ওয়েতেই তেলের দাম নির্ধারণ করি। সব কিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছে। আমরা একটাই মেসেজ দিতে চাই- ভোজ্যতেল এখন যে অবস্থায় আছে, আশা করছি ক্রাইসিস হবে না।
বাংলাদেশ সময় : ১৪৫৯ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২২
জিসিজি/এসএ