ঢাকা: বাংলাদেশ বাণিজ্য ব্যাবধান কমাতে সিঙ্গাপুরে রপ্তানি বাড়াতে চায় বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বুধবার (১৮ মে) সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ডিরেক লোহ মতবিনিময়ের সময় তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সিঙ্গাপুরে ১১৬.৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। একই সময়ে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করেছে ২ হাজার ৪৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাণিজ্য ব্যাবধান কমাতে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরে রপ্তানি বাড়াতে চায়। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি বাংলাদেশ পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, ওষুধ এবং হালকা প্রকৌশল পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা গড়ে তোলা হচ্ছে। অনেকগুলো কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। পৃথিবীর অনেক দেশ এরই মধ্যে এখানে বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে এসেছে। সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করণ, এনার্জি এবং অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। এতে তারা লাভবান হবেন। বাংলাদেশ ১৭ কোটি মানুষের একটি বড় বাজার। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এখানে পণ্য উৎপাদন করে সহজেই অন্য দেশে রপ্তানি করা সম্ভব। বাংলাদেশ সরকার এখন বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ডিরেক লোহ বলেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশকে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। নৌপথে পণ্য পরিবহনে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশকে আরও সহযোগিতা দিতে পারে। পণ্যের অবাধ পরিবহন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লজিস্টিকস, বন্দর ব্যবস্থাপনা ও শুল্ক কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম সহজ করতে সহায়তা দেওয়া সম্ভব। সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়নে সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল (প্রা.) লিমিটেড সহযোগিতা করতে পারে।
তিনি বলেন, সেমি-কন্ডাক্টর উৎপাদনে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। এতে পণ্য পরিবহনে ব্যয় কমানো যাবে। সিঙ্গাপুর বিভিন্ন শিল্পের উন্নত কাঁচামাল বাংলাদেশে সরবরাহ করে। ডিজিটাল অবকাঠামোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। হালাল পণ্য রপ্তানিতে সিঙ্গাপুরের সার্টিফিকেশনসহ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বিদ্যমান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা সম্ভব। এজন্য সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে উভয় দেশের মধ্যে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময় করতে একমত পোষণ করা হয় বৈঠকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, মে ১৮,২০২২
জিসিজি/এমএমজেড