ঢাকা: দেশে টানা ১৩ মাস ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির পর রপ্তানি কমেছে। গত সেপ্টেম্বরে ৩৯০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
তবে, সার্বিকভাবে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের রপ্তানি ইতিবাচক ধারাতেই রয়েছে।
রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান রোববার (০২ অক্টোবর) প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
পরিসংখ্যান সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। এ সময়ে ১ হাজার ২৪৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যেখানে, গত বছরের প্রথম তিন মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ১০২ কোটি ডলারের পণ্য।
প্রবৃদ্ধি কমার কারণ
রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়া। ইপিবি'র প্রতিবেদন বলছে, গত মাসে ৩১৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ কম।
গত মাসে ওভেন ও নিট উভয় ধরনের পোশাক রপ্তানিই হ্রাস পেয়েছে। যেখানে নিটওয়্যার রপ্তানি ৯ শতাংশ এবং ওভেন রপ্তানি কমেছে ৫.৬৬ শতাংশ। যার প্রভাব পড়েছে মোট রপ্তানিতে।
বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিকারকদের প্রতিষ্ঠান বিজিএমইএ-এর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে যে প্রবৃদ্ধিতে মন্দা হবে, সে বিষয়ে ইতোমধ্যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিজিএমইএ।
এখন, সেপ্টেম্বরের রপ্তানি পরিসংখ্যানে তা স্পষ্টতই প্রতিফলিত হয়েছে। কোভিড পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী খুচরা বাজার বিভিন্ন সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে, কনটেইনারের অপ্রতুলতা এবং সাপ্লাই চেইন সংকট, কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির ফলে এমনটি হচ্ছে।
তিনি বলেন, অর্থনীতিতে পূর্বাভাস অনুযায়ী মন্দার আবির্ভাব যার কারণে খুচরা বিক্রয়ে ধ্বস নেমেছে। ক্রেতাদের পোশাকের চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে – প্রভৃতি সংকটে পোশাক শিল্প বিপযর্স্ত।
বিজিএমইএ-এর এই পরিচালক বলেন, ক্রেতারা তাদের ইনভেন্টরি এবং সাপ্লাই চেইনকে নিজেদের জন্য লাভজনক রাখতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছেন, এমনকি তাদের মধ্যে কেউ কেউ উৎপাদন এবং অর্ডার পযর্ন্ত আটকে রেখেছেন। সামগ্রিকভাবে শিল্পের জন্য একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
রপ্তানি বেড়েছে হোম টেক্সটাইলের
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কৃষিপণ্য, হিমায়িত খাদ্য, হস্তশিল্প, বাইসাইকেল, আসবাব রপ্তানি কমে গেছে।
তৈরি পোশাকের পর সবচেয়ে বেশি ৩৫ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে। যা গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় ২৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি।
এছাড়া, তৃতীয় শীর্ষ রপ্তানি হয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে-৩২ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের। যা, গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় ২০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি।
এর আগে, পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা জানিয়েছিলেন বিজিএমইএ-এর সভাপতি ফারুক হাসান। তার প্রমাণ মিলল ইপিবির এই পরিসংখ্যানে। ধারণা করা হচ্ছে সামগ্রিক অর্থনীতিতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২২
এমকে/এসআইএস