আয়কর তথ্যসেবা কেন্দ্রগুলো এখনো জমে ওঠেনি। কর অঞ্চলের কর্মকর্তারা অনেকটাই অলস সময় পার করছেন।
করোনা মহামারির আগে থেকে আয়কর দেওয়ায় উৎসাহিত করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর মেলা করছে। একই সেবা এবার দেওয়া হচ্ছে আয়কর তথ্যসেবা মাসে। সারাদেশের ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেলে আয়কর তথ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। নতুন ই-টিআইএন দেওয়া ও আয়কর রিটার্ন সম্পর্কিত সব সেবা বিভিন্ন সার্কেলের এসব সেবাকেন্দ্রে পাওয়া যাচ্ছে।
সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কর অঞ্চল ১, ১১, ১৪ ও ১৭ সার্কেল ঘুরে দেখা যায়, কর্মকর্তারা ডেস্ক সাজিয়ে বসে আছেন। তবে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা খুবই কম। সেবাদানকারী কেউ কেউ মোবাইল ফোনে চ্যাট করছেন, কেউ বসে গল্প করছেন। দুয়েকজন সেবাগ্রহীতা এলে চাহিদামতো সেবা দেওয়া হচ্ছে।
ট্যাক্স সম্পর্কিত সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা এত কম কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে অঞ্চল-১ তথ্যসেবা কেন্দ্রের তথ্য প্রদানকারী নাজমুল আলম বলেন, এ ধরনের কার্যক্রমে সেবাগ্রহীতারা মাসের শেষের দিকে ভিড় জমান। চাকরিজীবী করদাতারাই সেবা নিতে আসেন। তাদের বেশির ভাগই মাসের শেষের ১০দিনে আয়কর রিটার্ন জমা দেন। এবারও তাই হবে। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। যদিও এখন বিকেলের দিকে লোকজন আয়কর ট্যাক্স দিতে আসছেন। তবে সংখ্যায় খুবই কম।
কর অঞ্চল-১১ এর তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৪০ শতাংশ আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছে। প্রতিদিনই কিছু মানুষ আসছেন সেবা নিতে। মাসের শেষ ১০দিন বাকিরা আয়কর রিটার্ন দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দনিয়া থেকে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে আসা গাজী ওসমান এই প্রতিবেদককে বলেন, এখানে সহজে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া যায়, কোনো সমস্যা হয় হয় না, ভয় নেই। আমি নিজের আয়কর রিটার্ন আগেই দিয়েছি, আজ এসেছি ভাইয়ের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে। আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া ঝামেলা ও ট্যাক্স অফিসের লোকজন অযথাই হয়রানি করে মনে করে সে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়নি। আমি সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি যাতে তারা বুঝতে পারেন আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া কঠিন বা ভয়ের কোনো কাজ নয়। নিজের চোখে দেখবে, ভয় ভেঙে যাবে। কর তথ্য-সেবা কেন্দ্রের দেওয়ালে সাটানো বড় বড় ছবি ভাইকে দেখিয়েছি। বলেছি, এসব বড় বড় স্থাপনা আমাদের ট্যাক্সের টাকায় তৈরি হয়। এগুলো আমাদের। এ জন্য আমাদের আয়কর দিতে হবে।
কর আহরণ ও কর দেওয়ায় মানুষকে উৎসাহিত করার লক্ষ্য নিয়ে কর তথ্যসেবা মাস পালন করা হচ্ছে। করোনার আগে উৎসবের আমেজে করমেলায় এসব সেবা দেওয়া হতো। পরে করোনা সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে বড় জনসমাগম এগিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে কর অঞ্চলগুলোতে তথ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।
চলতি নভেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে শুরু হয়ে সেবাদান চলবে ৩০ তারিখ পর্যন্ত। ২০২০ সালের নভেম্বরকে ‘আয়কর তথ্যসেবা মাস’ হিসেবে ঘোষণা করে রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় আয়কর তথ্যসেবা মাস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশব্যাপী সার্কেলগুলোতে আয়কর রিটার্ন, টিআইএন দেওয়া এবং চালান নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১, নভেম্বর ১৬, ২০২২
জেডএ/আরএইচ