ঢাকা, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

সম্পাদকীয়

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী শেখ হাসিনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৬
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী শেখ হাসিনা

রাজনীতিতে একটি কথা আছে- ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। এই কথা মুখের বুলি হয়ে থাকেনি শেখ হাসিনার কাছে।

‘দেশকে ভালোবাসি, দেশের জনগণকে ভালোবাসি’ বলে যে দৃঢ় উচ্চারণ, তা তার মুখে সবসময় সত্য হয়ে ফোটে। শেখ হাসিনার হাতেই দেশের গণতন্ত্র ধারাবাহিকতা পেয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে তিনিই রেখে চলেছেন অগ্রণী ভূমিকা। দেশকে, দলকে, দলের প্রতিটি সদস্যকে, আর সর্বোপরি দেশের আপামর জনসাধারণকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে তিনি ‘জননেত্রী’ উপাধির প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা দেখিয়ে চলেছেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিলের প্রাক্কালে শেখ হাসিনাকে ঘিরে এই বিশ্বাস আর দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে তার স্বপ্নের সকল রূপকল্পে পূর্ণাঙ্গ আস্থা দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের।

হাজারো প্রতিকূলতা কাটিয়ে  কিভাবে একজন মানুষ স্রেফ জনগণকে আর দেশকে ভালোবেসে এগিয়ে যেতে পারে, সারা বিশ্বেই তার দৃষ্টান্ত শেখ হাসিনা। বলা যায়, জনগণের প্রত্যশা পূরণের লক্ষ্যেই তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই তার পথ চলা। উন্নয়নের সকল প্রচেষ্টাই জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনা করার লক্ষ্যে সে কথা বার বার উচ্চারণ করেন শেখ হাসিনা।

তৃণমূল থেকে উঠে আসা ঐতিহ্যবাহী একটি দল আওয়ামী লীগ তার সকল গৌরব অক্ষুণ্ন রেখে এগিয়ে চলেছে। নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ার কাজে আওয়ামী লীগের আত্মনিয়োগ অনেকাংশেই স্পষ্ট। শেখ হাসিনা তার দৃঢ় হাতে দেশ পরিচালনার পাশাপাশি দলকেও সুগঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। তারই সুস্পষ্ট ফল হিসেবে দলটির জাতীয় কাউন্সিল ঘিরে আজ এত সাড়া, এত প্রত্যাশা, এত আয়োজন।

কেমন হচ্ছে এই কাউন্সিল? সে প্রশ্নে বলা চলে দলের ভেতরেও ফুটে উঠেছে গণতন্ত্রের স্পষ্ট ধারাবাহিকতা। কাউন্সিলে তার প্রকাশ দেখা যাবে। দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসছে এমন অনুমান করা হচ্ছে। তারুণ্য স্থান পাচ্ছে এবারের কমিটিতে। পাশাপাশি অভিজ্ঞদের কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াও সুসম্পন্ন।

শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেয়েছে ১৯৯৬-২০০১, ২০০৯-২০১৪ ও ২০১৪-২০১৯ এই তিন দফা। তার হাত ধরে গঙ্গা চুক্তি, শান্তি চুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ সাহসী কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে তারই নেতৃত্বে গড়ে উঠছে পদ্মা সেতু। আগেই তৈরি হয়েছে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু। খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে তারই হাত ধরে। সাধারণ মানুষকে স্বাবলম্বী করতে তিনিই এনেছেন একটি বাড়ি একটি খামার। আর জাতির দায় মুক্তির জন্য তিনি জাতির জনকের খুনিদের ফাঁসিতে যেমন ঝুলিয়েছেন, তেমনি একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের একে একে ফাঁসির কাষ্ঠে তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।    

শেখ হাসিনার এই এগিয়ে চলার ইতিহাস আওয়ামী লীগের ইতিহাসকেই সম্মৃদ্ধ করেছে। যে দলটির হাত ধরে দেশ স্বাধীন হয়েছে, বিশ্বমানচিত্রে হয়েছে নিজেদের একটি স্বাধীন ভূমি। সেই দলের হাত ধরেই হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি।

আমরা যদি একটু পেছনে ফিরে দেখি ১৯৭৫ সালে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সবাই নিহত হলেও বিদেশে থাকায় বেঁচে যান দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। দীর্ঘ সময় দেশের বাইরে থেকে অবশেষে ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার দেশে ফেরার সুযোগ হয়। এরপর থেকে গত সাড়ে তিনটি দশক অনেকটা হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। শেখ হাসিনাকে হত্যার শতাধিক ব্যর্থ চেষ্টা হয়েছে। এর মানেই হচ্ছে একটি অংশ তাকে হত্যা করতে চায়, আর সারাক্ষণই তা চায়।

কিন্তু রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আর বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে অসীম সাহসকে পুজি করেই তার এগিয়ে চলা। যে পথ এখনও অনেক দূর পর্যন্ত প্রশস্ত। এরই মধ্যে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে তার সুনাম বিশ্ব পরিমণ্ডলে বিস্তৃত। তার কাছে গোটা বিশ্বের প্রত্যাশাও বাড়ছে।

সারা বিশ্বে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ যখন একটি বড় সমস্যা তখন বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ দমনে শেখ হাসিনা যে ভূমিকা দেখিয়েছেন তাতে বিশ্ব নেতারা তাকে হ্যাটস অফ করছেন। তারা এর কৌশল জানতে চাইছেন। জলবায়ূ পরিবর্তন যখন সবার সমস্যা তখন অন্যের সহায়তার আশায় বসে না থেকে নিজেই লড়াই করে শেখ হাসিনা হয়ে উঠেছেন চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ। নারীকে রাজনৈতিক কেবল নয়, অর্থনৈতিক ক্ষমতার মাঝে তুলে এনে তিনি আজ প্লানেট ফিফটি ফিফটি চ্যাম্পিয়ন। আর সার্বিকভাবে তাকেই বলা হয় এজেন্ট অব চেঞ্জেস।

বিশ্বজোড়া খ্যাতি নিয়ে এই ‘জননেত্রী’ বাংলাদেশ নামের একটি দেশকে বিশ্বের কাছে সম্মানের স্থানে আসীন করেছেন। রাজনৈতিক সকল সহিংসতা, জ্বালাও- পোড়াও ও ডামাডোলকে শক্ত হাতে বিদায় করে দেশে শান্তি এনেছেন। দেশের বাইরেও সন্ত্রাস ও সংঘাতের এলাকাগুলোতে সেনা পাঠিয়ে জাতিসংঘের শান্তিতেও তার সরকার রেখে চলেছে অনন্য সাধারণ ভূমিকা।

গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার অগ্রপথিক শেখ হাসিনার এই অগ্রণী ভূমিকা জাতি স্মরণ করবে, বিশ্বেও হয়ে থাকবে স্মরণীয়।  

বাংলাদেশ সময় ১৫৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৬
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।