ঢাকা, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষা

ইবির নিয়োগে বাধা, অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত পরীক্ষা

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২২
ইবির নিয়োগে বাধা, অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত পরীক্ষা

ইবি: ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের বাধায় অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার টাইপিস্ট পদের নিয়োগ পরীক্ষা।  

একই সঙ্গে আগামী ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য আইকিউএসি ও ফাইন আটর্স বিভাগের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার টাইপিস্ট পদের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

 

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। যেখানে 'অনিবার্য কারণবশত টাইপিস্ট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে' বলে উল্লেখ করা হয়।

জানা যায়, বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার টাইপিস্ট এর একটি পদের বিপরীতে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষায় ২৬৬ জনকে টাইপিং দক্ষতা পরীক্ষায় আহ্বান করা হয়।  

প্রার্থীরা নির্ধারিত সময়ের আগেই পরীক্ষাস্থল ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে উপস্থিত হন। পরীক্ষা বোর্ডের আহ্বায়ক ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান। এছাড়া উপ-রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) চন্দন কুমার দাস সদস্য সচিব এবং আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক আহসান-উল-আম্বিয়া বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, সকালে পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রার পরীক্ষাস্থলে গেলে তাকে বাধা দেন ছাত্রলীগের চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান বেশকিছু নেতাকর্মী। এতে রেজিস্ট্রার ফিরে যান। একইসঙ্গে প্রার্থীদেরও চলে যেতে বলেন নেতাকর্মীরা।  

পরে প্রার্থীরা বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করে চলে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা দূর থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছি। আমরা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করলেও প্রশাসন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। উল্টো অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে। এটা চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে হয়রানি। প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে এমন হতো না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, বর্তমান প্রশাসন ছাত্রলীগের মধ্যে অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকলেও তাদের নিয়োগ না দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিচ্ছে। এছাড়াও নিয়োগ নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছি।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ‘যারা পরীক্ষা স্থগিত করেছে তারা ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী, যারা দীর্ঘদিন থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কাজ করে আসছিল। বর্তমান কমিটির কেউ সেখানে ছিল না। ’

পরীক্ষায় বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, 'আমি পরীক্ষাস্থলে যাওয়ার আগেই শুনলাম কিছু ছেলে পরীক্ষা নিতে বাধা দেওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রশাসন সিদ্ধান্ত জানাতে চেয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে প্রার্থীরা আশা নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসে। এমন কাজ কোনোভাবেই ঠিক নয়। '

রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘অনিবার্য কারণবশত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এর বাইরে আমার আর কিছু বলার নেই। ’

উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম বলেন, 'কারা কি করেছে সবাই বিষয়টি জানে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা পরীক্ষা নিতে গিয়েছিলাম কিন্তু বাধা দেওয়ায় বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা তো কারো সঙ্গে মারামারি করতে পারি না। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।