ঢাকা : বুয়েটের জরুরি এক সিন্ডিকেট সভায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার জন্য ধর্মঘটরত শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সভায় বুয়েট কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করেছেন, শিক্ষকরা সিন্ডিকেটের আহ্বানে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীদের জীবনের মূল্যবান সময়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে তাদের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে শিগগিরই যোগ দেবেন।
বুয়েটের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে বুধবার ওই জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষকদের দাবি পর্যালোচনা করা হয় এবং স¤প্রতি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের উত্থাপিত বিভিন্ন প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ এবং কর্তৃপক্ষের পূর্বাপর গৃহীত সিদ্ধান্ত ও কার্যাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে কর্তৃপক্ষ প্রচলিত কোনো প্রশাসনিক নিয়মের ব্যত্যয় না ঘটিয়ে যাবতীয় কার্যাবলী সম্পাদন করে আসছেন বলে মত প্রকাশ করা হয়।
সভায় অভিযোগ করা হয়, গত বেশ কিছু দিন ধরে বুয়েট প্রশাসনের বিভিন্ন কাজে বাধা প্রদানসহ প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডকে গতিহীন করার লক্ষ্যে কিছু দাবি নিয়ে শিক্ষকরা বিভিন্ন সময় আন্দোলনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এসব দাবির মধ্যে শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীতকরণ, কর্মকর্তাদের ভুতাপেক্ষ পদোন্নতি নিয়ে আপত্তি এবং নানা ধরনের ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক অভিযোগ উল্লেখযোগ্য।
সভায় আরো বলা হয়, সম্প্রতি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জনৈক শিক্ষককে নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় ও সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বুয়েট কর্তৃপক্ষ কেন এর প্রতিবাদ দেননি, একে কেন্দ্র করে এবং জনৈক কর্মকর্তার নিয়মমাফিক ভূতাপেক্ষ নিয়োগের বিষয়ে আপত্তি তুলে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশনসহ ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন। এতে বুয়েটের পরিবেশ অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে।
সভায় বলা হয়, তাদের উত্থাপিত এসব অভিযোগের ফলে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়, তা দূর করার জন্য কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে যথাযথ ব্যাখ্যা/বিবৃতি শিক্ষকসহ সকলের মাঝে বিতরণ করে। এতে করে শিক্ষকদের আন্দোলনের চেষ্টা স্তিমিত হয়। সম্প্রতি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কর্মকাণ্ডের বিশদ বিবরণও লিখিত আকারে সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জানানোর জন্য বিতরণ করা হয়েছে। যার কপি বুয়েট ওয়েবসাইটেও (www.buet.ac.bd) পাওয়া যাবে।
সভা বর্তমানে প্রচলিত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ভূতাপেক্ষ নিয়োগ/পদোন্নতি প্রদান বিষয়টিও বিশদভাবে পর্যালোচনা করার প্রয়োজন মনে করে। এ বিষয়ে ভবিষ্যতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে বলেও সিন্ডিকেট সভায় মত প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ সময় : ১৫৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১২
সম্পাদনা : অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর