ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বুয়েটের শিক্ষকরা।
শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বের হয়ে তারা এ ঘোষণা দেন।
এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষকদের ১২ জনের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যায়।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন- সমিতির সভাপতি প্রফেসর মুজিবুর রহমান, সহ-সভাপতি ড. মো. মাকসুদ হেলাল, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক গোলাম জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ আতাউর রহমান প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আরো অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে শিক্ষা সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের জানিয়েছেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের সমস্যা ও অভিযোগের কথা ধৈর্য ধরে শুনেছেন। গত ৭ এপ্রিল থেকে বুয়েটের ক্লাস বন্ধ থাকায় প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি শিক্ষকদের শনিবার থেকেই ক্লাস শুরুর অনুরোধ জানিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন, শনিবারই সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি জানান, শিক্ষকরা যেসব অনিয়ম-অভিযোগ ও সমস্যার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সেসব তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। সত্যিকারের কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন বুয়েটের শিক্ষকদের।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর মুজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের আন্তরিক পরিবেশে কথা হয়েছে। তিনি আমাদের কথা ধৈর্য ধরে শুনেছেন। আমাদের অভিযোগগুলো তিনি খতিয়ে দেখবেন বলেও আশ্বস্ত করেছেন। বৈঠক ফলপ্রসু হয়েছে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘শনিবার সকালে সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা রয়েছে। আশা করছি, প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়টি চূড়ান্ত করে ঘোষণা দেওয়া সম্ভব হবে। ’
শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে বেশ কিছু দিন ধরে বন্ধ রয়েছে বুয়েট। তাই ক্লাস চালুর দাবিতে আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানকে স্মারকলিপি দিয়েছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
নিজেদের দাবি-দাওয়া আদায়ের নামে ক্লাস বন্ধ রেখে শিক্ষক নেতাদের কনসালটেন্সি (পরামর্শক) করে বেড়ানোর অভিযোগ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ১৯৬২ সালে বুয়েট প্রতিষ্ঠার পর এটা ছিল শিক্ষকদের দ্বিতীয় লাগাতার ধর্মঘট। মাত্র চার মাস আগে চাকরির বয়স বৃদ্ধির দাবিতে হঠাৎ করেই ধর্মঘট ডাকেন শিক্ষক নেতারা। এর আগে বহুবার সমস্যা তৈরি হয়েছে। কিন্তু কখানোই শিক্ষার্থীদের সংকটের মুখে ফেলে কর্মসূচি পালন করেননি এখানকার শিক্ষকরা।
শিক্ষক সমিতির বর্তমান নেতৃত্ব অনেক ঠুনকো বিষয়েও বারবার ধর্মঘটে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
৭ এপ্রিল থেকে প্রশাসন ও বুয়েট শিক্ষক সমিতির বিরোধের ফলে বুয়েটে অচলাবস্থা বিরাজ করছিল। চলমান এ পরিস্থিতিতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা সেশন জট নিয়ে আতঙ্কিত।
বাংলাদেশ সময় : ২০০৫ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১২
এসকে/সম্পাদনা : ওবায়দুল্লাহ সনি, নিউজরুম এডিটর; আহমেদ জুয়েল ও অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর