ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

এক আঙুল দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে নিপা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
এক আঙুল দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে নিপা এক আঙ্গুলে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে নিপা আক্তার

শরীয়তপুর: দুই হাতে মাত্র একটি আঙুল নিয়ে জন্ম নেওয়া নিপা আক্তার এবার শরীয়তপুরের আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। যাদের হাতে সব আঙুল আছে তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কোনো রকম শ্রুতি লেখকের সাহায্য ছাড়াই পরীক্ষা দিচ্ছে এ শিক্ষার্থী।

তার স্বপ্ন বড় হয়ে শিক্ষক হওয়া এবং প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়ানো।

আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও নিপা'র পরিবার সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের চর কারাভোগ গ্রামের দিনমজুর বিল্লাল হোসেন মোল্লা ও নাছিমা বেগমের ছোট মেয়ে নিপা আক্তার। জন্মের পর তার হাতে নয় আঙুল না থাকলেও থেমে যায়নি তার পড়ালেখা। এক আঙুল দিয়ে চালাতে পারেন মোবাইল ও সংসারের যাবতীয় কাজ। সহযোগিতা করেন মা ও বোনকে। নিপার স্বপ্ন পড়ালেখা করে হবেন একজন আদর্শ শিক্ষক। ভালো পড়ালেখা করে দাঁড়াতে চান প্রতিবন্ধীদের পাশে। এজন্য যত প্রতিবন্ধকতা আসুক সব উতরে যেতে চান লক্ষে। দেখিয়ে দিতে চান ইচ্ছের কাছে বাধা নয় শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন নিয়ম অনুযায়ী সব সুবিধা পাচ্ছে নিপা। এবারও সে ভালো ফল করবে বলে আসা তাদের। সে পিএসসি ও জেএসসিতেও ভালো রেজাল্ট করেছে।

এসএসসি পরীক্ষার্থী নিপা আক্তার বলেন, প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে আমি পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার হাতে নয়টি আঙুল নেই, একটি আঙুল আছে। একটি আঙুল দিয়ে আমি ছোট বেলা থেকে পড়াশোনা করছি। আপনারা দোয়া করবেন আমি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় যেন ভালো রেজাল্ট করতে পারি। ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চাই। প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়াতে চাই।

আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রনজিত কুমার সাহা বলেন, নিপার বাম হাত নেই এবং ডান হাতে মাত্র একটি আঙুল। নিপা একটি আঙুলের ওপর ভর করে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করছি। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে কিন্তু নিপাকে বৃত্তির ব্যবস্থা করেছি। নিপার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।

জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান বলেন, প্রথাগত সমাজ কাঠামোর চোখে যারা পিছিয়ে পড়া মানুষ, তারা এখন আর পিছিয়ে নেই। আর দশটি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তারা নিজেকে সংযুক্ত করেছেন উন্নয়নের ধারায় ঠিক স্বাভাবিক মানুষের মতো করেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।