ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চালানো গণহত্যা বা জেনোসাইডের স্বীকৃতির দাবিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২২ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এ সম্মেলনের আয়োজন করে আমরা একাত্তর, ইউরোপিয়ান ফোরাম বাংলাদেশ ও প্রজন্ম ৭১।
আমরা একাত্তরের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আমরা একাত্তরের প্রধান সমন্বয়কারী প্রকৌশলী হিলাল ফয়েজী।
বক্তব্য রাখেন সাবেক ডাচ এমপি ও মানবাধিকারকর্মী হ্যারি ভ্যান বোমেল, প্রজন্ম একাত্তরের একেএম আমিনুর রহমান, সাংবাদিক তাওহীদ রেজা নূর, নেদারল্যান্ডস-ভিত্তিক ডায়াসপোরা সংগঠন বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, যুক্তরাজ্যের সিনিয়র সাংবাদিক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন, লে. কর্নেল (অব) সাজ্জাদ জহির, আমস্টারডামের ভ্রিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অ্যান্থনি হলসল্যাগ, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হারুন হাবিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন, ইবিএফের যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি আনসার আহমেদ উল্লাহ।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত জেনোসাইডের স্বীকৃতির দাবির সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে একমত। জেনোসাইডের অন্যতম কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সম্মেলনে উত্থাপিত প্রতিটি দাবি আদায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহযোগিতা করবে।
হ্যারি ভ্যান বোমেল বলেন, জেনোসাইড ইতিহাসের অংশ। আমাদের জেনোসাইডের স্বীকৃতির জন্য সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
সাজ্জাদ জহির বলেন, পাকিস্তান একটি জেনোসাইডাল জাতি। তারা প্রথম গণহত্যা চালায় বেলুচিস্তানে, পরে বাংলাদেশে।
শাহরিয়ার কবির বলেন, জেনোসাইডের স্বীকৃতি না হলে সেটির পুনরাবৃত্তি হয়, যেটা আমরা মিয়ানমার ও মধ্যপ্রাচ্যে দেখতে পাচ্ছি।
ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রদের টার্গেট করে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশ জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির যোগ্যতা রাখে।
তাওহীদ রেজা নূর বলেন, আমরা জেনোসাইডের স্বীকৃতি চাই, আমরা ন্যায়বিচার চাই। জেনোসাইড অস্বীকার করলে জেনোসাইডের পুনরাবৃত্তি ঘটে।
বিকাশ চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, একটি গণহত্যাকে যখন স্বীকৃতি দেওয়া হয় না, তখন তা অস্বীকার করার শামিল। ১৯৭১ সালে কী ঘটেছে এ বিষয়ে আমাদের নিজেদের শক্ত অবস্থান তুলে ধরতে হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রতিটি গণহত্যার স্বীকৃতি থাকা উচিত। এ স্বীকৃতি আদায়ের মধ্য দিয়ে যারা ভুক্তভোগী, তাদের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারব।
হিলাল ফয়েজী বলেন, গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের লড়াই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্ব। এ লড়াইয়ে আমরা সমবেত করব এদেশের জনগণকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২৩
এসকেবি/আরএইচ