ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জাতিসংঘের ইউনোডার ফেলো হলেন শাবিপ্রবির ইউশা আরাফ

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৫ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০২৩
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জাতিসংঘের ইউনোডার ফেলো হলেন শাবিপ্রবির ইউশা আরাফ তরুণ গবেষকদের সঙ্গে ইউসা আরাফ। ইনসেটে ইউসা আরাফ।

শাবিপ্রবি (সিলেট): প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বায়োওয়েপন গবেষণায় ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিসেস ফর ডিজআর্মামেন্ট অ্যাফেয়ার্সের (ইউনোডা) ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ইউশা আরাফ।  

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সম্প্রতি ২০ জন নির্বাচিত তরুণ গবেষকদের তালিকা প্রকাশ করে ইউনোডা। এতে বিশ্বের ১৭টি দেশ থেকে ২০ তরুণ গবেষককে ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত করা হয়। ইউনোডা জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও আঞ্চলিক নিরস্ত্রীকরণ প্রচেষ্টায় সহায়তাকারী অঙ্গ সংগঠন হিসেবে কাজ করে।

এ বিষয়ে কথা ইউশা আরাফের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।

নিজের অনুভূতি জানিয়ে ইউশা আরাফ বলেন, বায়োওয়েপন গবেষণায় জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন হিসেবে কাজ করে ইউনোডা। এতে চলতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২০ জন ফেলো নির্বাচিত করা হয়। এ তালিকায় প্রথম বাংলাদেশি আমি নির্বাচিত হয়েছি। তবে আমি ২০ জনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ফেলো।

তরুণ এ গবেষক বলেন, সারাবিশ্বে বায়োটেকনোলজি অগ্রগতি নিয়ে অনেক পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। আগামীর সময়গুলো নিউক্লিয়ার ওয়েপনের চেয়েও বায়োওয়েপন ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে।  তাই এ বিষয়ে কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় আমি অনেক আনন্দিত। তাই বায়োওয়েপন নিয়ে সায়েন্টিফিক ডিপ্লোম্যাট হিসেবে বিশ্বের সংগঠনের সঙ্গে কাজ করতে চাই।

ইউশা বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হিসেবে ডেঙ্গু মহামারি নিয়ে গবেষণা করছেন।

জানা যায়, বিশ্বকে বায়োওয়েপন ও নিউক্লিয়ার ওয়েপন থেকে মুক্ত রেখে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে আসছে ইউনোডা। এতে প্রতি পাঁচ বছর পর পর বায়োওয়েপন নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে এর সদস্যভুক্ত ১৮৪ দেশের প্রতিনিধি সদস্যরা উপস্থিত থেকে জৈবিক অস্ত্র কনভেনশনের (বিউসি) কাঠামোর মধ্যে বহুপাক্ষিক আলোচনায় তরুণদের আগ্রহী করে গড়ে তোলেন।

এই কনভেনশনে জৈবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি, উদ্ভাবনী ও সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এতে অনূর্ধ্ব ৪০ বছরের বিজ্ঞানীদের জন্য মেয়াদি মেয়াদি ‘ইয়ুথ ফর বায়োসিকিউরিটি ফেলোশিপ’ কার্যক্রম পরিচালনা করে সংস্থাটি। এতে বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশ থেকে ৮ শতাধিক বিজ্ঞানী ও গবেষক থেকে ২০ জন ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ইউশা আরাফ ইউনোডার কোনো প্রোগ্রামের ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হন শাবিপ্রবির তরুণ এ গবেষক।

প্রসঙ্গত, ইতোমধ্যে ইউশা আরাফের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে ৬০-এর অধিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাপত্রগুলো সাইটেশন ১৩০০ অতিক্রম করেছে। এছাড়া ২০২১ ও ২০২২ সালে স্কোপাস ডেটাবেজ অনুযায়ী সর্বাধিক গবেষণাপত্র প্রকাশনায় শাবিপ্রবির শ্রেষ্ঠ গবেষক নির্বাচিত হন ইউশা। পাশাপাশি ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণাগারে গবেষণা সহযোগী হিসেবে কাজ করেন।  

করোনা ভাইরাসের অমিক্রন নিয়ে প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ বিশ্ব বিখ্যাত জার্নাল ‘জার্নাল অব মেডিক্যাল ভাইরোলজি’তে বিগত দুই বছরের শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। এছাড়া ২০২২ সালে থেকে জীববিজ্ঞানের বৈশ্বিক সর্ববৃহৎ প্রতিযোগিতা আইজেম কমপিটিশন, বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  

চলতি বছর কানাডা সরকারের সহযোগিতায় ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর বায়োসেফটি অ্যাসোসিয়েশন (আইএফবিএ) ১ বছরের গ্লোবাল মেন্টেরশিপ প্রোগামের জন্য সমগ্র বিশ্ব থেকে ২০ জন তরুণ গবেষক ও বিজ্ঞানীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এখানেও প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নির্বাচিত হন ইউশা আরাফ।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।