ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জোনাক বহিষ্কৃত, ফের ভর্তির সুযোগ দেবে বিশ্ববিদ্যালয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৩
জোনাক বহিষ্কৃত, ফের ভর্তির সুযোগ দেবে বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রথম মহাকাশচারী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুরের কৃতি শিক্ষার্থী শাহ জালাল জোনাক। পড়ছিলেন রাশিয়ার বাউমান মস্কো স্টেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে।

তবে সম্প্রতি খবর প্রকাশ হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন জোনাক। যদিও সে তথ্য মিথ্যা এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেন তিনি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জোনাকের বহিষ্কৃত হওয়ার ঘটনাটি সত্য বলে একটি কনফারেন্সে জানিয়েছে বাউমান মস্কো ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই কনফারেন্সে জোনাকের সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন-উত্তরে কথা বলেন বাউমান মস্কো স্টেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির 'ইন্টারন্যাশনাল সাইন্টিফিক অ্যান্ড এডুকেশনাল কোঅপারেশন' ডিপার্টমেন্টের প্রধান দিমিত্রি দ্রবিশেভ। ফেসবুকে 'জ্যোর্তিবিদ্যা ও সৃষ্টিতত্ত্ব' পেইজের পক্ষে ইন্টারভিউটি নেন তাওহীদ ফাতেহ এবং ওয়েস।

এসময় জোনাকের বহিষ্কার সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে দিমিত্রি দ্রবিশেভ জানান, জোনাকের বর্তমান অবস্থা হলো- একাডেমিক ব্যর্থতার কারণে তিনি আর আমাদের (বাউমান মস্কো স্টেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির) ছাত্র নন।

তিনি বলেন, জোনাক ২০১৮ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রাশিয়া সরকারের স্কলারশিপে রকেট কমপ্লেক্স অ্যান্ড স্পেস সায়েন্স বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পান। মোট পাঁচ বছরের প্রোগ্রামের প্রথম বছর প্রস্তুতিমূলক কোর্স হিসেবে ধরা হয়, যা ২০১৯ সালে জোনাক সফল ভাবে সম্পন্ন করেন। পরবর্তী চার বছর মূল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট লেভেলে তিনি প্রথম ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে তৃতীয় দফায় জোনাককে একাডেমিক সুযোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু সেক্ষেত্রেও পাস করতে পারেননি তিনি। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় তার ছাত্রত্ব বাতিল করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সংবাদ প্রকাশের পর জোনাক দাবি করেন তিনি তৃতীয় বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে চলতি বছর এপ্রিলে বাংলাদেশে আসেন। চতুর্থ বর্ষের সপ্তম সেমিস্টারের ক্লাস শুরু করতে আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে রাশিয়া যাবেন এবং ২০২৪ সালে গ্র্যাজুয়েট হবেন। জোনাকের এই তথ্য কতটা সত্য এবং যুক্তিযুক্ত? তা জানতে চাইলে দিমিত্রি দ্রবিশেভ বলেন, যদিও বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বহিষ্কার করেছে, তবে জোনাক চাইলে তার গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্ভবত গ্রহণও করবে। তবে এজন্য তাকে পুনরায় প্রথম থেকে শুরু করতে হবে; অর্থাৎ প্রথম সেমিস্টার থেকে। এক্ষেত্রে সবকিছু ঠিক থাকলে তার গ্র্যাজুয়েশন সম্পূর্ণ হবে ২০২৭ সালে। এছাড়া শিক্ষাকার্যক্রম বাতিল হলে ভিসা বেশিদিন থাকে না; এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা দেশে ফেরেন। তবে তারা যদি তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে আগ্রহী হন, তবে তারা নতুন শিক্ষা বর্ষের জন্য অপেক্ষা করেন এবং আবেদনের মাধ্যমে নতুন করে ভর্তি হয়ে ভিসা পেতে পারবেন।

তিনি জানান, জোনাকের আইডি কার্ড ও অন্যান্য কার্ড যা তার সঙ্গে রয়েছে (বাংলাদেশে), এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ। এমন (বহিষ্কার) অবস্থায় শিক্ষার্থী দেশ (রাশিয়া) ত্যাগ করলে এগুলো তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিয়ে যেতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে জোনাক সেটি করেননি। আর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত কোন তথ্য প্রকাশ করে না। তবে তার একাডেমিক স্ট্যাটাস অবশ্যই প্রকাশযোগ্য। এক্ষেত্রে কারণ উল্লেখ করে লিখিত আবেদন করলে তা অবশ্যয় প্রকাশ করা যায়। কিন্তু তার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন- বাসস্থান, জন্মস্থান, আত্মীয়স্বজন ইত্যাদি সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয় না।

এসময় জোনাকের সম্পর্ক জানতে ভার্সিটির সঙ্গে যে ইমেইলে যোগাযোগ করা হয় এবং সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেসব তথ্য দেওয়া হয়, সেগুলো সত্য বলেও নিশ্চিত করেন রাশিয়ার বাউমান মস্কো স্টেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির 'ইন্টারন্যাশনাল সাইন্টিফিক অ্যান্ড এডুকেশনাল কোঅপারেশন' ডিপার্টমেন্টের প্রধান দিমিত্রি দ্রবিশেভ। আর শাহ জালাল জোনাক চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে রি-এডমিশন গ্রহণ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি। তবে এক্ষেত্রে সবকিছু ঠিক থাকলে তার গ্র্যাজুয়েশন সম্পূর্ণ হবে ২০২৭ সালে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৩
এইচএমএস/নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।