চাঁদপুর: চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার রাজারগাঁও ইউনিয়নের রামরা গ্রামে আহমেদাবাদ লুৎফুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন উদ্বোধন হলেও পর্যাপ্ত টেবিল-বেঞ্চ না থাকায় মেঝেতে বসে পাঠদান করতে হয়।
৫০ জোড়া টেবিল-বেঞ্চ থাকার কথা থাকলেও এখন আছে মাত্র সাত জোড়া।
সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে উত্তর ও পশ্চিমে রামরা গ্রামে আহমদাবাদ লুৎফুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান। বিদ্যালয়টিতে এ বছর প্রাক প্রাথমিক থেকে শুরু করে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২০৫ জন শিক্ষার্থী পড়ছে। ২০২২ সালের শুরুতে চার কক্ষ বিশিষ্ট বিদ্যালয়টির একতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কিন্তু এরপরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ভবন বুঝিয়ে দিলেও শিক্ষার্থীদের জন্য টেবিল ও বেঞ্চ দেয়নি। যার কারণে মেঝেতে ক্লাস নিতে হচ্ছে (পাঠদান)।
বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও এখনও পর্যন্ত তা ভাঙা হয়নি। সেখানে থাকা মাত্র সাত জোড়া টেবিল ও বেঞ্চ এনে একটি শ্রেণিকক্ষে রাখা হয়েছে। ওই শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করে। বিদ্যালয়ের দুই পাশে গ্রামের পাকা সড়ক। সীমানা প্রাচীর না থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকে শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া ২০৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য কমপক্ষে পাঁচজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও শিক্ষক আছে মাত্র তিনজন। একজন প্রধান শিক্ষক এবং বাকি দুজন সহকারী শিক্ষক।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী হুমায়রা হিমু, লামিয়া ও সালমান জানায়, গত তিন বছর ধরে এ বিদ্যালয়ে বেঞ্চ নাই। যে কারণে পড়ালেখা করতে সমস্যা হয়। গত বছর শীতের সময়ে মেঝেতে বসতে অনেক কষ্ট হয়েছে। সামনে আবার শীত আসছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহমুদ হাসান মোস্তফা জানান, ২০১৮ সালে আমি এ বিদ্যালয়ে যোগদান করি। তখন শিক্ষক চারজন থাকলেও এখন আমিসহ তিনজন। চার কক্ষ বিশিষ্ট ভবন ২০২২ সালের শুরুতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কোনো টেবিল-বেঞ্চ দেয়নি। বেঞ্চ না থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখা এবং পড়ার খুবই কষ্ট হচ্ছে। আমি বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানালেও বেঞ্চ পাচ্ছি না।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিদ্যালয়টির ভাঙা ভবন ছিল। নতুন ভবন পেলেও শিক্ষার্থীদের জন্য বেঞ্চ পাইনি। বার বার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেছি। এছাড়া বিদ্যালয়টির পাশে সড়ক। সীমানা প্রাচীর না থাকায় শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনার পড়ার আশঙ্কা থাকে। দুটি সমস্যা সমাধানে আমরা সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
হাজীগঞ্জ সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহজাহান জানান, আগে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ হলে একই সঙ্গে টেবিল-বেঞ্চ বরাদ্দ দিত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু বর্তমানে ভবন ও ফার্নিচার আলাদা বরাদ্দ দেওয়া হয়। আশা করি, এ বিদ্যালয়টির জন্য এ অর্থবছরেই ফার্নিচার বরাদ্দ হবে।
চাঁদপুর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক সিদ্দিকী জানান, আহমেদাবাদ লুৎফুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন হয়েছে। তবে বেঞ্চ নেই। সরকারি বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমরা দ্রুত এ বিদ্যালয়ে বেঞ্চ সরবরাহের ব্যবস্থা করব। এছাড়া বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে শিক্ষার পরিবেশ আরও সুন্দর করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩
এসআই