ঢাকা: মাল্টি মিডিয়া ক্লাসরুম চালু করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশের ২০ হাজার ৫০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ সরবরাহের উদ্দেশে এক চুক্তি সই করেছে।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ চুক্তি সই অনুষ্ঠানের পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ তথ্য দেন।
আইসিটি’র মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ এবং টেলিফোন শিল্প সংস্থা লিমিটেডের (টেশিস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আবু সাইদ খান চুক্তিতে নিজ নিজ পক্ষে সই করেন। প্রতিটি ল্যাপটপের ভ্যাটসহ মূল্য পড়বে ৫৩ হাজার ৩২৬ টাকা।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে একটি করে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, স্পিকার ও ইন্টারনেট মডেম সরবরাহ করা হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০হাজার ৫০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন করে শিক্ষককে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরির প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এরইমধ্যে ৪হাজার ৭৪৫ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৩হাজার ৭০০টি মাধ্যমিক স্কুল, ৪হাজার দাখিল মাদ্রাসা, ১হাজার ২০০ আলীম মাদ্রাসা, ১হাজার ৬০০ কলেজ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষাসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগসচিব সুনীল কান্তি বোস, প্রধানমন্ত্রীর একান্তসচিব ও সাপোর্ট টু ডিজিটাল বাংলাদেশ (এটুআই) প্র্রোগ্রামের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক মো: নজরুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত সচিব এস এম গোলাম ফারুক, মো: ইকবাল খান চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এম রফিকুল ইসলাম, এস এম শওকত আলী, সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক রতন কুমার রায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল¬াহিল আজাদ, মাইক্রোসফটের সিনিয়র ডিরেক্টর ভারত মিরচান্দানী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘২০ হাজার ৫০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালুর মাধ্যমে আধুনিক শিক্ষাদান পদ্ধতি ও শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিক্ষা ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসবে। ’
মন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে প্রযুক্তিকে জনগণের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে চায়। এরজন্য আমাদের নতুন প্রজন্মকে প্রযুক্তি দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তথ্য প্রযুক্তিকে পৌঁছে দিতে হবে দেশের সব স্কুল-কলেজে। ২০হাজার ৫০০টি স্কুল-কলেজে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করতে পারা প্রযুক্তি উন্নয়নে একটি বড় মাইলফলক।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পদ্ধতির ফলে পাঠদান আরো আকর্ষণীয় ও আনন্দদায়ক হবে, জটিল ও বিমূর্ত বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের কাছে সহজবোধ্য করে উপস্থাপন করা যাবে। ভবিষ্যতে আইসিটি বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হবে, শহর-গ্রামের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির বৈষম্য অনেকাংশে দূর হবে। এর ফলে শিখন-শেখানো কার্যক্রমে গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটবে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিষয়বস্তুকে সহজেই বাস্তব জীবনঘনিষ্ট করে ভাবতে এবং বাস্তবে প্রয়োগ করতে শিখবে।
নৃরুল ইসলাম নহিদ জানান, এ প্রকল্পের কার্যক্রম দেশব্যাপী তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তির শক্ত ভিত তৈরি করবে, নতুন প্রজন্মের আউট- সোর্সিংয়ের মাধ্যমে আয়ের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে এবং দেশ-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। শিক্ষা আনন্দদায়ক হবে বলে ঝরে যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, জুন, ১৮, ২০১২
সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর