জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেছেন, উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন স্থগিত করার দাবি যুক্তিযুক্ত নয়।
আগামী ২০ জুলাই উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন হবেই- মন্তব্য করে তিনি বলেন, সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপাচার্য এ কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ১৯(২) ধারা অনুযায়ী ‘মেয়াদ উত্তীর্ণ সদস্যদের স্থলে পরবর্তী ‘সাকসেসর’ না আসা পর্যন্ত পূর্ববর্তী সদস্যদের মেয়াদ বহাল আছে। কাজেই বর্তমান সিনেট সদস্যদের দিয়ে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
উপাচার্য আরও বলেন, প্রশাসনের অনুরোধ উপেক্ষা করে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক, একাডেমিক ও গবেষণা কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক অধিকারের অপচর্চা করছেন। প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে সেখানে কাউকে ঢুকতে না দেওয়া গণতান্ত্রিক আচরণ নয়।
তিনি বলেন, একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সবাইকে অংশীদার হতে হবে। দীর্ঘ আট বছর ধরে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এ জন্য সবার আগে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন হওয়া বাঞ্ছনীয়।
তিনি এসময় বলেন, আমি দায়িত্বগ্রহণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসে। আবাসিক হলসমূহে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করার পর হলে হলে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়। এমন একটি সুপরিবেশে গত ২৯ জুন বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বিপুলসংখ্যক সম্মানিত সিনেট সদস্য যোগদান করেন। সভায় সিন্ডিকেটের ৩টি ও অর্থ কমিটির ১টি ক্যাটাগরিতে নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়।
উপাচার্য এসময় আরও বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন স্থগিত করতে পারলে কর্তৃপক্ষ স্বস্তি বোধ করতো। কিন্তু বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে সেটা সম্ভব নয়। সিনেটে বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরি আছে। সেসব ক্যাটাগরিতে অতিদ্রুত নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
তিনি জানান, রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি ও জাকসু প্রতিনিধি নির্বাচন খুবই সময়সাপেক্ষ বিষয়। তদুপরি রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমতাবস্থায় সিনেটের বিভিন্ন ক্যাটাগরির নির্বাচন শেষ করে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন করতে গেলে দীর্ঘ সময় লাগবে। তাছাড়া ইতিপূর্বে ২০০৪ সালে সিনেট সদস্যদের দ্বারা উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন অনুষ্ঠানের দীর্ঘ ৮ বছর পর আবার সিনেটে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
উপাচার্য বলেন, কারও প্রতি আমার অনুরাগ বা বিরাগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে চাই। উপাচার্য আন্দোলনকারী শিক্ষকদের আন্দোলন পরিহার করে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
মতবিনিময় সভায় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. ফরহাদ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিন, সিন্ডিকেট সদস্য, রেজিস্ট্রার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১২
সম্পাদনা: রোকনুল ইসলাম কাফী, নিউজরুম এডিটর