ঢাকা : উপাচার্য বিহীনভাবে চলছে শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমান ভিসি প্রফেসর ড. শাহ আলমের মেয়াদ ১৬ জুলাই শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন উপাচার্য বিহীন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফাইলে স্বাক্ষর করার কোনো লোক নেই। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত কাজে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। বর্তমান রেজিস্ট্রার নিয়োগ প্রাপ্ত নন। তিনিও প্রধান প্রকৗশলী হয়ে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছেন।
উপাচার্য শূন্য থাকায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। গত বুধবার শিক্ষক সমিতির কার্যনিবাহী কমিটির সভায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সভায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই উপাচার্য, প্রো-উপাচার্য, ট্রেজারার নিয়োগ দেওয়া জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তারা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন একজন প্রফেসর নাম প্রকাশ না করা শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গঠিত সার্চ কমিটির মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ পান।
তিনি জানান, ২০০১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহ থেকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়ে আসছেন। বিষয়টি নিয়ে কার্যনিবার্হী কমিটিতে তীব্র আপত্তি তোলেন শিক্ষকরা।
শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী সকলের দাবী এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র প্রফেসর বাংলানিউজকে বলেন, ২০০১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শেকৃবি ছাত্র কৃষিবিদ আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিমের সহায়তায় এটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের করা হয়। এখন পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
শেকৃবি কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হবে এ বিষেয় সরকারের উর্ধ্বতন মহল থেকে একাধিক বার আশ্বাস পাওয়া গেলেও কখনই তা কার্যকর হয়নি।
কিছুদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী উপচার্য নিয়োগের আশ্বাস দিলে, শুরু হয় দৌড়-ঝাঁপ। নীল দলের সিনিয়র শিক্ষক প্রফেসর মোঃ শাদাত উল্লা উপাচার্য পদ পেতে রাজনৈতিক ও সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন।
প্রসঙ্গতঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ সালের ১৫ জুলাই শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় প্রফেসর মোঃ শাদাত উল্লাকে প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন।
কিন্তু মাত্র ১ মাসের মাথায় চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এসে তাকে সরিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাদা দলের শিক্ষক প্রফেসর ড. এ.এম ফারুককে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের সকল কর্মসূচি পালন করা হতো। এমনকি তত্ত্বাবধারক সরকারের সময় যখন শেখ হাসিনা জেলে ছিলেন তখনও তার মুক্তির দাবীতে তিনি জোরালো আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।
প্রফেসর মোঃ শাদাত উল্লা ছিলেন বিএআই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তৎকালীন বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটের বিএআইকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের তার নেতৃত্ব ছিল প্রশংসনীয়। তিনি তখন বিএআই অধ্যক্ষ দায়িত্ব ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিন থেকে শুরু করে সকল দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন।
সূত্র জানায়, প্রফেসর মোঃ শাদাত উল্লাকে উপাচার্য নিয়োগ দিতে জোরালোভাবে মাঠে নেমেছেন কৃষি অনুষদের সাবেক ডিন ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কৃষিবিদ প্রফেসর ড. হযরত আলী, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ও শিক্ষক সমিতি সভাপতি প্রফেসর ড. শহীদুর রশীদ ভূইয়া।
বাংলাদেশ সময় : ২০২০ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১২
এনএম/ সম্পাদনা : সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর
kumar.sarkerbd@gmail.com