ঢাকা: মেডিক্যালে ভর্তি বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে রিট করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা।
সোমবার বেলা ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় আসা শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা এ কথা জানান।
এছাড়াও বরিশালেও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার সরকারি সিদ্ধান্ত প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সামাজিক ও যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হয় এ ভর্তি প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে।
ভর্তিচ্ছুরা বলছেন, এসএসসি বা এইচএসসি ফলাফল কিছুটা খারাপ হলেও অনেকেই পরে ভর্তি পরীক্ষায় ভাল করে। জিপিএ এর ভিত্তিতে লাখ লাখ শিক্ষার্থী থেকে কিভাবে মেধাক্রম যাচাই করা হবে তারও সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা। এছাড়াও হুট করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত তাদের গত ৪ মাসের শ্রমকে বৃথা করে দিয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
জিপিএ এর ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়াটি একটি অস্বচ্ছ প্রক্রিয়া হবে এবং এর মাধ্যমে দুর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর পথ তৈরি হবে বলে মত দেন তারা।
এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফেসবুকে খোলা একটি পেজে ভর্তিচ্ছু বেশ ক’জন শিক্ষার্থী ও মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী সরকারি এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের আশ্রয় নেওয়ার সুপারিশ করেছেন।
প্রতিবাদ সভায় এসে ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাংলানিউজকে বলেন, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত অন্তত এক বছর আগে থেকে দিতে হবে। তাহলে সেভাবে এইচএসসি`র প্রস্তুতি নেওয়া যাবে। ”
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানান, মেডিক্যাল এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। যারা মেডিক্যাল ভর্তির জন্যে গত ৪ মাস ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা এখন কি করবে?
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী পার্থ বাংলানিউজকে জানান, মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষায় কোনো অংক আসে না। প্রাণিবিজ্ঞান ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান থেকে প্রশ্ন আসে অনেক বেশি। প্রতি লাইনই মুখস্থ করতে হয় ভর্তির জন্যে। কিন্তু পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন বিজ্ঞানের অংক করতে হয় না। এছাড়াও সাধারণ জ্ঞান প্রয়োজন হয় অনেক কম।
তিনি বলেন, “অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় বা ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তির জন্য শুধু অংকের উপরই বেশি জোর দিতে হয়। ”
ভর্তিচ্ছু আরেক শিক্ষার্থী রুমা বলেন, “আমরা ৪ মাস ধরে মেডিক্যালে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছি, এখন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হতে পারবো না। কারণ সে ধারায় প্রস্তুতি নেইনি। ”
ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থীর বড় ভাই জসিম বাংলানিউজকে বলেন, “আমার ছোট বোনের এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ ৫ ছিল, কিন্তু এইচএসসিতে জিপিএ ৫ থাকলেও গোল্ডেন ছিল না। সে মেডিক্যালে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে এখন আমরা সবাই হতাশ। এখন ভাগ্যের ওপর নির্ভর করবে সব। ”
জসিম আরও বলেন, “এ সিদ্ধান্তে গ্রাম থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা মেডিক্যালে ভর্তি থেকে আরও পিছিয়ে পড়বে। কারণ, জিপিএ বিবেচনায় তারা শহরের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পেরে উঠবে না।
উল্লেখ্য, রোববার মেডিক্যালে জিপিএ এর ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তির স্বিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬, আগস্ট ১৩, ২০১২
সম্পাদনা: বেনু সূত্রধর নিউজরুম এডিটর/ সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর