সিলেট: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় সিলেট শিক্ষা বোর্ডে গত বছরের চেয়ে এ বছর পাশের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা বেড়েছে। ফলে দেশের সাধারণ ৮টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে এবার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে সিলেট শিক্ষা বোর্ড।
চলতি বছর সিলেট শিক্ষাবোর্ডে পাশের হার ৯১ দশমিক ১৫। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৭৪৮জন শিক্ষার্থী। গত বছর পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৪৫ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিলো ১হাজার ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী।
সিলেট শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এবারের জেএসসি পরীক্ষায় সিলেট শিক্ষাবোর্ডে মোট ৯৫ হাজার ২২৭ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে। এর মধ্যে পাশ করেছে ৮৬ হাজার ৮০১ জন।
রোববার দুপুরে বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল মান্নান খান ২০১৩ সালের জেএসসি পরীক্ষার আনুষ্ঠানিক ফলাফল প্রকাশ করেন।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬০টি প্রতিষ্ঠান শতভাগ পাস করেছে। তবে শূন্য পাসের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। সার্বিক ফলাফলে সিলেট বোর্ডে এবার প্রথম হয়েছে সিলেট ক্যাডেট কলেজ।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণের দিক থেকে এবারের ফলাফলে সিলেট বোর্ডে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে আছে। তবে ছেলে পরীক্ষার্থী কম হওয়া পাশের হারের দিকে ছেলেরাই এগিয়ে রয়েছে।
মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪১ হাজার ৭৯৩ জন ছেলে পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাশ করেছে ৩৮ হাজার ২৬৮ জন। ছেলেদের পাশের হার ৯১ দশমিক ৫৭ ভাগ। অন্যদিকে ৫৩ হাজার ৪৩৪ জন মেয়ে পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাশ করেছে ৪৮ হাজার ৫৩৩ জন। মেয়েদের পাশের হার ৯০ দশমিক ৮৩ ভাগ।
তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে মেয়েরা অনেক এগিয়ে রয়েছে। সর্বমোট ৫ হাজার ৭৪৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ২হাজার ৬৮৩জন ছেলে এবং ৩ হাজার ৬৫ জন মেয়ে শিক্ষার্থী।
মেয়েদের মধ্যে সিলেট জেলায় ১হাজার ৪২৮জন, হবিগঞ্জ জেলায় ৫৩৮জন, সুনামগঞ্জ জেলায় ৩১০জন ও মৌলভীবাজার জেলায় ৭৮৯জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
অন্যদিকে ছেলেদের মধ্যে সিলেট জেলায় ১হাজার ৩৮৪জন, হবিগঞ্জ জেলায় ৪২৬জন, সুনামগঞ্জ জেলায় ২৯২জন ও মৌলভীবাজার জেলায় ৫৮১জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিলেট ব্লু-বার্ড হাইস্কুল থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২৩৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ ছাড়া সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮ জন, সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এছাড়া মোট উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ গ্রেডে ২২ হাজার ৮৭৬ জন, এ মাইনাস গ্রেডে ১৮ হাজার ৯৩৭ জন, বি গ্রেডে ১৮ হাজার ৬৯৮ জন, সি গ্রেডে ১৮ হাজার ৬৪২ জন ও ডি গ্রেডে ১ হাজার ৯০০ জন শিক্ষার্থী পাশ করে। এছাড়া ৮ হাজার ৪২৬ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে ।
ফলাফল সম্পর্কে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল মান্নান খান বলেন, ঐচ্ছিক বিষয়ের নম্বর মূল বিষয়ের সঙ্গে যোগ হওয়ায় এবার জিপিএ ৫ বেড়েছে। শিক্ষা বোর্ডের সার্বিক ফলাফল চিত্রে সব সূচকে এগিয়ে গেছে সিলেট শিক্ষা বোর্ড।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পরও শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবার ফলাফল ভাল হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৩
সম্পাদনা: তমাল আবদুল কাইয়ূম, নিউজরুম এডিটর/রাইসুল ইসলাম, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর (অ্যাক্ট.)