ঢাকা: ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাক্রমে এ বছর নতুন তিনটি বিষয়সহ ১২টি নতুন বই সংযুক্ত হয়েছে।
যে সব বিষয়ের ওপর নতুন বই সংযুক্ত হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
এর মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়টি এবারই প্রথম ৬ষ্ঠ শ্রেণীর পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এ ছাড়া জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০-এর আলোকে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ২০১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা ও সামাজিক বিজ্ঞানের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, বিগত পাঁচ বছরে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত সব পাঠ্যপুস্তক চার রঙের ৮০ গ্রামের কাগজে মুদ্রণ এবং ২৩০ গ্রামের আর্ট কার্ডে কভার মুদ্রণ করে আকর্ষণীয় করা হয়েছে। ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর সব পাঠ্যপুস্তকের মলাট চার রঙের করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংযোজন করা হয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আলোকে সব পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করা হয়।
এ ছাড়া পাঠ্যপুস্তকে জেন্ডার সমতা ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা-ধর্ম-বর্ণের মানুষের সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা বানানের সমতা বিধানের জন্য সব পাঠ্যপুস্তকে বাংলা একাডেমির বানান রীতি অনুসরণ করা হয়েছে।
এছাড়া জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবার প্রথমবারের মতো ৫১ হাজার স্কুলের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হয়েছে।
এখানে ৬০ লাখ ১৬ হাজার ৫১৬ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ কোটি ৮০ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮৮টি বই ছাপানো হয়েছে। বইগুলো শিগগিরই বিতরণ করা হবে বলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে, বই বিতরণের উদ্বোধনকালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অবিরাম ধ্বংসাত্মক ও নাশকতামূলক কর্মসূচির মধ্যেও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের শুরুতেই বই তুলে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত।
এতকিছুর মধ্যে যথারীতি বই ছাপানো, বাঁধাই করা ও সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই পৌঁছে দেওয়া সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জের কাজ ছিল।
তিনি বলেন, এনসিটিবিসহ আমাদের শিক্ষা পরিবারের সদস্যরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে তা বাস্তবায়ন করেছে। আমি ছাপাখানার মালিক-কর্মচারী, বাঁধাই শ্রমিক, প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকেই প্রতি বছরের পহেলা জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়। তবে এবার পহেলা জানুয়ারি ছুটি থাকায় এ উৎসব একদিন পিছিয়ে ২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়।
এদিকে, ২০১৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক, এবতেদায়ী, মাধ্যমিক, দাখিল ও কারিগরি বিদ্যালয়ের তিন কোটি ৭৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬৭২ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে ২৬৮টি বিষয়ের মোট ২৯ কোটি ৯৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৮ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৪
সম্পাদনা: মিলিতা বাড়ৈ, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর