জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ হত্যার বিচারের দাবিতে ক্যাম্পাসে সংহতি সমাবেশ, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিবাদী গানের আয়োজন করে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ৪ দফা দাবি প্রদান করেন।
দাবিগুলো হল, জুবায়ের হত্যার দ্রুত বিচার, ৯ জানুয়ারির মধ্যে হত্যাকারীদের ছবিসহ পোস্টার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনের রাস্তাকে জুবায়ের সরণি করা ও পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল সেন্টার নির্মাণ করা।
জুবায়ের হত্যার ২ বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় শহীদ মিনার চত্বরে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য(প্রশাসন) অধ্যাপক আফসার আহমদ, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক এ এ মামুন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. শরিফ উদ্দিন, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান, আনিছা পারভিন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার আহবায়ক মৈত্রী বর্মন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সহ-সভাপতি তন্ময় ধর, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি কলি মাহমুদ প্রমুখ।
অধ্যাপক এ এ মামুন বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যার মামলার বিচার কাজ শেষে রায় দেওয়া হলেও জুবায়ের হত্যার মামলার রায় দেওয়া হচ্ছে না। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত এই রায় দেওয়ার দাবি জানাই। আমি ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ আন্দোলনের সাথে পূর্বে ছিলাম এখনও আছি, আগামীতেও থাকবো।
অধ্যাপক মো. শরিফ উদ্দিন বলেন, জুবায়ের হত্যার পর ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারের আন্দোলনের আমরা একাত্মতা প্রকাশ করেছিলাম, এখনও করছি। জুবায়ের হত্যার পরও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। জুবায়ের হত্যার যথাযথ বিচার হলে হয়তো এই ঘটনাগুলো ঘটতো না।
এ সময় ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে শিক্ষার্থীদের ৪টি দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন তিনি।
অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান বলেন, এই হত্যাকান্ডের যদি সুষ্ঠু বিচার করা হয় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয় তবে ক্যাম্পাসে আর কোন হত্যাকাণ্ড ঘটবে না। কিন্তু এই বিচার নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করার কারণে হত্যাকারীরা ক্যাম্পাসে অবাধে বিচরণ করছে।
কলি মাহমুদ বলেন, ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স পায় না কিন্তু, হত্যা মামলার আসামিরা ক্যাম্পাসের অ্যাম্বুলেন্সে করে পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে আসে। এটা কি হত্যাকারীদের পুনর্বাসন নয়? তাহলে কি আমরা ধরে নেব প্রশাসন হত্যাকারীদের মদদ দিচ্ছে, তাদের পুনর্বাসন করছে।
সংহতি সমাবেশ শেষে একই স্থানে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের প্রযোজনায় ‘একটি ননফিকশন’ প্রদর্শিত হয়। পরে ঐ স্থান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে জুবায়ের সরণি নামফলক উন্মোচন করে ৪২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে আরো সংহতি প্রকাশ করেন মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, এম এম আকাশ, আনিসুল হক, সুলতানা কামাল, কাবেরী গায়েন, রেহনুমা আহমেদ, মানস চৌধুরী, ফারুক ওয়াসিফ, পাভেল পার্থ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৩
সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর (অ্যাক্ট.)