ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

কূপমণ্ডূকতায় আবিষ্ট বদ্ধঘরের খোলা জানালাটি হোক শিক্ষা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৪
কূপমণ্ডূকতায় আবিষ্ট বদ্ধঘরের খোলা জানালাটি হোক শিক্ষা ছবি : ফাইল ফটো

ঢাকা: তথ্যপ্রযুক্তি ও অসাম্প্রদায়িক শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, কুসংস্কার আর অন্ধকার কূপমুণ্ডকতায় আবিষ্ট বদ্ধঘরের খোলা জানালাটি হোক শিক্ষা।

তিনি বলেন, যা কিছু সংকীর্ণ, শিক্ষা আমাদের শেখাবে তা পরিহার করতে।

যা কিছু সাম্প্রদায়িক, শিক্ষা তা বিকার বলে সবার কাছে প্রতিভাত করবে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি ও অসম্প্রাদায়িক শিক্ষার সমন্বয় খুবই জরুরি।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

এ ছাড়া দেশের গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি কমানো ও তাদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি চালু করতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিও আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক ও সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে বলেন, কেবল বড় লোকের সন্তানদের জন্যু নয়, দরিদ্র ঘরের সন্তানরাও যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়, সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।

তথ্যপ্রযুক্তি ও অসাম্প্রদায়িক শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, কুসংস্কার আর অন্ধকার কূপমণ্ডূকতায় আবিষ্ট বদ্ধঘরের খোলা জানালাটি হোক শিক্ষা; যা কিছু সংকীর্ণ, শিক্ষা আমাদের শেখাবে তা পরিহার করতে। যা কিছু সাম্প্রদায়িক শিক্ষা, তা বিকার বলে সবার কাছে প্রতিভাত করবে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি ও অসম্প্রাদায়িক শিক্ষার সমন্বয় খুবই জরুরি।

বিশ্বায়নের এই যুগে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সব ক্ষেত্রে বিশ্ব প্রতিদ্বন্দ্বিতা মোকাবেলায় প্রচলিত ও অপ্রচলিত কলা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

এছাড়াও চাহিদাভিত্তিক ও কর্মনির্ভর শিক্ষা এ যুগে একান্তভাবে প্রয়োজন বিষয়টি সুবিবেচায় রাখারও দাবি জানান তিনি।

সমাবর্তনে বিশেষ বক্তা মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মুহাম্মদকে স্বাগত জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, আপনার উপস্থিতি আমাদের সম্মানিত করেছে। আমি মনে করি, এই উপস্থিতি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আপনার সৌহার্দ্য প্রকাশ করেছে।

পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব পালনে সমাবর্তনের গ্রাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, তোমাদের মনে রাখতে হবে, আজকের এই সমাবর্তন একদিকে যেমন তোমাদের অর্জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে, তেমনি দায়িত্বও অর্পণ করছে। রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতি তোমাদের যে দায়বদ্ধতা আছে, তোমরা সঠিকভাবে তা পালন করবে।

তিনি বলেন,  ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, এ উপমহাদেশেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রতিরূপ দেখা দিয়েছিল। নালন্দা, তক্ষশীলা, বিক্রমশিলার বিদ্যাপীঠ শুধু বিদ্যার সঞ্চার নয়, বিদ্যার গৌরবেও ছিল খ্যাতিমান।

তিনি বলেন, পণ্ডিত শীলভদ্রের মতো শিক্ষক ছিলেন এ সব প্রতিষ্ঠানে। বিশ্বজনীন মনুষত্বের প্রতি সুগভীর শ্রদ্ধা, বিদ্যার প্রতি গৌরববোধ, সৃষ্টির পরম আনন্দে সবাইকে চিত্রসম্পদ দান করার দায়িত্বজ্ঞান ছিল সব শিক্ষকদের। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এ বিষয়টি মাথায় রেখে শিক্ষাদানের কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মুহাম্মদ, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইউআইটিএসের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।