ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ডিনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৪
ডিনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনা করে একটা সিদ্ধান্ত জানানো হবে- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন আহমেদের এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবারের মত আন্দোলন স্থগিত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বিকেল পৌনে তিনটার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করে তাদের এ কথা জানান সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন।



এর আগে সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যপক ড. নুরুল আমিন বেপারী সহ সাত শিক্ষককে চেয়ারম্যানের কক্ষে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করে মাস্টার্স ২য় সেমিস্টারের খ সেকশনের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। তাদের সাথে যোগ দেয় বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের খ সেকশনের শিক্ষার্থীরা।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে আমরা অবশ্যই পদক্ষেপ নেব। ভুল যে কারোরই হতে পারে।

তিনি বলেন, একাডেমিক কমিটির মিটিংয়ের পেপারস আমার হাতে এসে পৌ‍ছেছে। সবকিছু বিবেচনা করে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে পারবো বলে আশা করছি।

এদিকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিভাগের পক্ষ থেকে সমাধান না দেওয়া হলে আরো কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
তারা আরো ঘোষণা করে - এ ব্যাপারে সমাধান না পর্যন্ত তারা কোন ক্লাশ-পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারে বিভাগটির ক ও খ সেকশনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফল বৈষম্য হয়েছে, এমন অভিযোগ এনে এবং ফল পুণর্মূল্যায়ের দাবিতে আন্দোলন করছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার সকাল দশটা থেকে শিক্ষার্থীরা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের চতুর্থ তলায় অবস্থিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিভাগীয় অফিস ‍ও চেয়ারম্যানের কক্ষ অবরোধ করে এ আন্দোলন শুরু করে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা অবস্থান করে শিক্ষার্থীরা।

এদিকে একই দাবিতে মঙ্গলবার বেলা একটার পর থেকে আধাঘণ্টাব্যাপী বিভাগের সামনে মার্কসিটের ফটোকপি পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা । এ সময় নোটিশ বোর্ড থেকে এক শিক্ষকের ইনকোর্স নম্বরের রেজাল্ট শিট পুড়িয়ে দেয়।

পরবর্তীতে বিভাগের চেয়ারম্যান জানান, বুধবার একাডেমিক কমিটির মিটিংয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে বেলা ১২টার দিকে চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বেপারীর রুমে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় তিনি সহ সাতজন শিক্ষক তার রুমে অবস্থান করছেন। ক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন আবেদা সুলতানা, রাশেদুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, ফরিদ উদদীন প্রমুখ।

শিক্ষকদের বের হতে বাধা দিচ্ছেন কিনা জনতে চাইলে তারা হ্যাঁ সূচক উত্তর দেন।

একাডেমিক কমিটির মিটিংয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বেপারী বাংলানিউজকে বলেন, ‘ফল ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর তাতে সংশোধন বা পরিবর্তনের এখতিয়ার বিভাগের চেয়ারম্যান বা একাডেমিক কমিটির থাকেনা। তবে ভিসি চাইলে যেকোন কিছু করতে পারেন।

তাই আমরা একাডেমি কমিটির পক্ষ থেকে ভিসি স্যারকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছি শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি বিবেচনার জন্য। ’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত ১২ মার্চ মাস্টার্সের প্রথম সেমিস্টারের ফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফলে বিভাগের ‘ক’ ও ‘খ’ শাখার শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম বৈষম্য দেখা যায়।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদকে জানানো হয়েছে। কিন্তু ফল পুণর্মূল্যায়নের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ডিন ও ভিসি বরাবর লিখিত আবেদন পত্রের ফটোকপিও এসময় প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা।

বিভাগীয় অফিস সূত্রে জানায়, বিভাগের ‘ক’ শাখার ৯৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৪ জন জিপিএ-৩.৫০-এর বেশি নম্বর পেয়েছেন। অথচ একই পরীক্ষায় ‘খ’ শাখার ১৩৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২ জন এ নম্বর পেয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৪

** ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের ফের বিক্ষোভ, ৭ শিক্ষক অবরুদ্ধ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।