ঢাকা: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সকল শাখায় ১০০ নম্বরের আবশ্যিক বিষয় হিসেবে পরিসংখ্যানকে অন্তর্ভুক্ত করাসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান শিক্ষক সমিতি।
বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে(ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
এসময় বলা হয, সরকার নতুন শিক্ষা কারিকুলামে মাধ্যমিক স্তরে পরিসংখ্যান বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ জন্য ৪র্থ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত গণিতের একটি অধ্যায়ে পরিসংখ্যানের কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
পাশাপাশি সম্মান শ্রেণিতে ইন্টিগ্রেটেড কোর্স হিসেবে পরিসংখ্যানকে গুরুত্বের সঙ্গে পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা কারিকুলামে পরিসংখ্যানকে গুরুত্বহীন করে রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের মৌলিক বিষয়গুলো পড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয় যাতে স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নের জন্য শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় ভিত্তি গড়ে উঠে। অথচ উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানকে এমন অবস্থানে রাখা হয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীদের পরিসংখ্যান বিষয়টি নির্বাচনের স্বাধীনতা হ্রাস পেয়েছে।
এতে পরিসংখ্যানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা আশংকাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। অনেক কলেজে পরিসংখ্যান শিক্ষার্থীর সংখ্যা শূন্যের কোঠায়। ফলে এসব কলেজে পরিসংখ্যানের শিক্ষকদের চাকরি থাকা না থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলী দিতে একটি মহল এটি করেছে অভিযোগ করে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি চক্র জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলী দিয়ে গুণগত শিক্ষা বিরোধী এ কাজটি করেছে। এ জন্য মহলটি নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নে নিয়োজিত কিছু বিশেষজ্ঞদের প্ররোচিত করেছে।
সমিতির দাবি
সংবাদ সম্মেলনে পরিসংখ্যান বিষয়ের গুরুত্ব বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ৯ দফা দাবি জানানো হয়।
এর মধ্যে রয়েছে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ১০০ নম্বরের আবশ্যিক বিষয় হিসেবে পরিসংখ্যানকে অন্তর্ভূক্ত করা অথবা ব্যবসা শিক্ষা শাখার ৬ নম্বর গুচ্ছে আবশ্যিক হিসেবে উৎপাদন ও বিপণন/ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা বিষয়ের সঙ্গে ২০০ নম্বরের পরিসংখ্যান বিষয় আন্তর্ভুক্ত করা।
পরিসংখ্যান বিষয়ের প্রতি পত্রে তত্ত্বীয় ৬০ নম্বর ও ব্যবহারিক ৪০ নম্বর করা। এসএসসিতে চতুর্থ বিষয় হিসেবে ১০০ নম্বরের পরিসংখ্যান বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা। সকল সরকরি ও বেসরকারি কলেজে পরিসংখ্যান বিষয় খোলা। অনার্স কোর্স চালু আছে এমন সরকারি কলেজে পরিসংখ্যান বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করা। পরিসংখ্যান বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে এমন সরকারি কলেজে অধ্যাপক পদসহ অন্যান্য পদ সৃষ্টি করা।
বেসরকরি কলেজের জনবল কাঠামোতে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদ সৃষ্টি করা। সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যান সংশ্লিষ্ট পদসমূহে পরিসংখ্যান বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।
অনার্স কোর্স চালু আছে এমন সরকারি ও বেসরকারি কলেজে ইনট্রিগ্রেটেড পরিসংখ্যান কোর্সটি পরিসংখ্যান বিষয়ের শিক্ষকদের দ্বারা পাঠদান, প্রশ্নপত্র তৈরি এবং উত্তরপত্র মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সভাপতি প্রফেসর মো. খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক খান মোহাম্মদ শরীফ, কোষাধ্যক্ষ আতাহার হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৪