ঢাকা: সারা দেশে নির্বাচিত ৯৫টি মাদ্রাসার অবকাঠামো সম্প্রসারণ, কম্পিউটার, ল্যাপটপ প্রদান ও আইসিটি প্রশিক্ষণ কাজ গতি হারাচ্ছে।
প্রকল্পভুক্ত নির্মাণাধীন ৯৫টি মাদ্রাসার মধ্যে ৫৮টির কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন ‘এনহ্যানসিং দ্যা ইনভায়রনমেন্ট অব সিলেকটেড মাদ্রাসা ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৩ সালের এপ্রিলে।
প্রকল্পের আওতায় পাইল ফাউন্ডেশন নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত ১২ কোটি ৭০ টাকা খরচ হবে। অথচ প্রকল্পে ৮৩ ভাগ ঋণদানকারী সংস্থা ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংককে (আইডিবি) বিষয়টি এখনও অবহিত করা হয়নি।
এদিকে ৯৫টি মাদ্রাসার মধ্যে ৪টি প্যাকেজে ৫৮টির কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়েছে ৪০টির।
এ পরিস্থিতিতে নানা সমন্বয়হীনতায় গতি হারাচ্ছে প্রকল্পটি। এমনকি নির্ধারিত সময় জুন ২০১৫ মেয়াদে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে কি না তা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তার।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১শ’ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি খাত থেকে আসবে ১৭ কোটি ১৪ লাখ এবং আইডিবি‘র ঋণ সহায়তা থেকে মেটানো হবে ৮৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
প্রকল্পের আওতায় ৯৫টি মাদ্রাসায় ৪ তলা ভিতের একতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ, প্রতিটি মাদ্রাসায় ৪৮ জোড়া উচু-নিচু বেঞ্চ, ১টি করে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রিন্টার সরবরাহ এবং শিক্ষকদের আরবি, ইংরেজি ভাষা ও আইসিটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রকল্প প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, ৪টি প্যাকেজে ইতোমধ্যে ৫৮টি মাদ্রাসার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০টির দরপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ৯৫টি মাদ্রাসার মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৮টি মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে, তবে কাজ এখনও শুরু হয়নি। ’
এছাড়া মাদ্রাসার মাটি পরীক্ষার রিপোর্টে ডিপ ফাউন্ডেশনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ার অবশিষ্ট ৩৬টি মাদ্রাসার নির্মাণ কাজ পাইলিং ফাউন্ডেশন ব্যতীত করা সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, পিডব্লিউডি (পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট) রেট সিডিউল অনুযায়ী প্র্রতিটি ভবনের পাইলিংয়ের জন্য খরচ ৩৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই হিসেবে ৩৬টি পাইলিংয়ের জন্য খরচ হবে ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী অতিরিক্ত এই অর্থের ৮৭ ভাগ হিসেবে মোট ১১ কোটি টাকা আইডিবি থেকে সংস্থানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ৫৮টি মাদ্রাসায় নির্মাণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তবে অনুমোদিত কর্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যক্রম গৃহীত হচ্ছে না বলেও স্বীকার করেন তিনি।
কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ কেন হচ্ছে না তা জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী জানান, প্রকল্পের ‘মৃত্তিকা পরীক্ষা’ ও পুন:নির্মাণ কাজের জন্য আইডিবি জেদ্দা অফিসের অনাপত্তি পেতে বিলম্ব হওয়ায় যথাসময়ে নির্মাণ কাজ করা সম্ভব হয়নি।
প্রকল্পের কাজে গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে শিক্ষা সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিকের সভাপতিত্বে এক স্টিয়ারিং বৈঠক হয়। বৈঠকের পর শিক্ষা সচিব স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, মাটি পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী সাধারণ ফাউন্ডেশনে নির্মাণযোগ্য ৫৮টি মাদ্রাসার একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করতে হবে। পাইল ফাউন্ডেশন নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত ১২ কোটি ৭০ টাকা অর্থায়নের বিষয়ে আইডিবির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৪