ঢাকা: প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে অর্ধশতাধিক শিক্ষক, শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
সচিবালয়ে বুধবার সকাল সাড়ে দশটায় শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষামন্ত্রণালয় বলছে, বিগত বছরগুলোর ধারবাহিকতায় এবারও শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার মান বাড়াতে শিক্ষাবিদদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করবেন।
তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে করণীয় নির্ধারণ নিয়েই আলোচনা প্রাধান্য পাবে।
মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে মূল্যবান মতামত, পরামর্শ ও সুপারিশ গ্রহণের লক্ষ্যে দেশের খ্যাতিমান অর্ধশতাধিক প্রবীণ শিক্ষক, শিক্ষাবিদ ও সংশি¬ষ্টদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে মন্ত্রীর স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্র সংশি¬ষ্টগণের কাছে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পৌঁছানো হয়েছে।
আমন্ত্রণপত্রে মন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, গত সাড়ে পাঁচ বছরে বিভিন্ন সময়ে দেশের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে খ্যাতিমান শিক্ষক, শিক্ষাবিদ ও সংশি¬ষ্টদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করা হয়েছে। তা শিক্ষাক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হয়েছে।
চলমান এইএচএসসি পরীক্ষার ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্নপত্র ফাঁসের পর ওই পরীক্ষা স্থগিত করে ১০ এপ্রিল একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষামন্ত্রণালয়। কমিটিকে ১৫ দিনের সময় দিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও তারা আরো ১০ দিন সময় বাড়িয়ে নেয়।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ এনে ড. জাফর ইকবাল গণমাধ্যমে কয়েকটি কলাম লেখা ছাড়াও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এতে যোগ দেন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকেরাও।
শিক্ষামন্ত্রীও জাফর ইকবালের লেখার জবাব দিয়ে কলাম লেখেন।
এসব ঘটনার পরেই শিক্ষাবিদদের সঙ্গে বৈঠকের উদ্যোগ প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
শিক্ষামন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছাড়াও প্রবীন শিক্ষকদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
জাফর ইকবালও আমন্ত্রণ পেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রীর।
আমন্ত্রিতদের মধ্যে অধ্যাপক ড. সালাহউদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, অধ্যাপক রেহমান সোবহান, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, মেজবাহ উদ্দিন, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, অজয় রায়, ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নাম রয়েছে।
আরো আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিক, ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, ড. আইনুন নিশাত, আব্দুল মান্নান, আব্দুল খালেক, মুস্তাফা নুরুল ইসলাম, ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ কায়কোবাদ, নজরুল ইসলাম, ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, রাশেদা কে চৌধুরী, ড. এ এম এম সফিউল্লাহ, ড. মঞ্জুর আহমেদ, আবুল মোমেন, এম এম আকাশ, মুনতাসির উদ্দিন খান মামুন, ড. আক্তারুজ্জামান, ড. খোন্দকার সিদ্দিক-ই-রব্বানী।
তালিকায় নাম রয়েছে ডা. প্রাণগোপাল দত্ত, ড. এস এম নজরুল ইসলাম, ড. অনুপম সেন, ড. ফারজানা ইসলাম, ড. হারুন-অর-রশীদ, শামসুজ্জামান খান, আব্দুস সাত্তার মন্ডল, মেহতাব খানম, ড. মুহাম্মদ ইব্রাহীম, হাসান আজিজুল হক, ছিদ্দিকুর রহমান, আমিনুল ইসলাম, ড. এনামুল হক, ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, ড. রফিকুল হক, সালমা আখতার, কাজী ফারুক আহমদ, শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী।
এছাড়াও রয়েছেন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান ও মোস্তফা মনোয়ার, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন প্রমুখ।
এবারের পরামর্শ সভায় প্রাপ্ত মতামতও শিক্ষার আগামী কর্মপরিকল্পনাকে সমৃদ্ধ করে ভুল-ত্রুটি সংশোধন ও শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিতে সহায়ক করবে, আশা করেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ০২২৫ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৪