জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্য’র (ভিসি)পক্ষ থেকে কোনো বিধি-নিষেধ না থাকা সত্ত্বেও তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আখতার হোসেন বলেছেন, ‘ভিসি আজ আছে কাল থাকবে না। তাই রেজিস্ট্রারের অনুমতি ছাড়া তথ্য দেওয়া যাবে না।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে কয়েকটি ভবনের নির্মাণ কাজ ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার অভিযোগ উঠে।
এরই প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আখতার হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণ কাজ দেখাশোনা করার দায়িত্ব কোন কোন প্রকৌশলীকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন বিধি-নিষেধ আরোপ করেনি। কেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানালেন- সে বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।
এরপর ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীকে উপাচার্যের বক্তব্য জানানোর পরও তিনি তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, ‘ভিসি আজ আছে কাল থাকবে না। তাই রেজিস্ট্রারের অনুমতি ছাড়া তথ্য দেওয়া যাবে না। ’
এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘তাদের তথ্য দিয়ে তোমরা কী করবে? তারা কাজ করছে কি না সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে। ’
নির্মাণের আগে নকশাসহ ভবন সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য ভবনের সামনে রাখার নিয়ম থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নির্মাণ কাজে তা মানা হচ্ছে না।
কেন মানা হচ্ছে না এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চায় না, তাই নিয়ম মানা হয় না। ’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের তৃতীয় তলার পূর্বাংশের নির্মাণ কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মল্লিক এন্টারপ্রাইজ। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ভবনের ঐ অংশে ওঠে।
পরদিন রাতে বৃষ্টিতে ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে বিভাগীয় শিক্ষকের বইপত্র, কম্পিউটার এবং অন্যান্য আসবাবপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনার পর ঐ বিভাগের শিক্ষকেরা ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ কাজের অভিযোগ তোলেন।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। বাথরুমে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় কিছুদিন না যেতেই তা নষ্ট হয়ে গেছে।
শিক্ষকদের এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে গত পাঁচ এপ্রিল তদারকি কমিটিকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলে সিন্ডিকেট।
ভবনের ওই অংশের নির্মাণ কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুস সালাম মো. শরীফ, সহকারী প্রকৌশলী আহসান হাবীব (সিভিল-১) ও আসাদুজ্জামান (সিভিল-২)।
নির্মাণ কাজে ত্রুটির কথা অস্বীকার করে আবদুস সালাম মো. শরীফ বলেন, নির্মাণ কাজে কোনো প্রকার ত্রুটি হয়নি। নির্মাণের আগেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলেছিলাম জলছাদ করার জন্য। কিন্তু অতিরিক্ত টাকা খরচ হবে বলে প্রশাসন তা করেনি। জলছাদ না করার জন্যই পানি পড়ছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, প্রকৌশল অফিসের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। নতুন কলা ভবনের তৃতীয় তলার পূর্বাংশের নির্মাণ কাজের তদারকি কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, জুন ১৭,২০১৪