রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোরালো আন্দোলনকে উপেক্ষা করে চলমান সান্ধ্যকোর্স পরীক্ষার জন্য একটি বিভাগে নিয়মিত কোর্সের ক্লাস বন্ধ রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে জানান, সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে নিয়মতি শিক্ষার্থীদের রুটিন ক্লাস বন্ধ রেখে বিভাগের একটি কক্ষে সান্ধ্যকোর্সের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলেও শিক্ষকরা তা আমলে নেয়নি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিতর্কিত সান্ধ্যকোর্স চালুর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত ফেব্রুয়ারি মাসে ক্যাম্পাসে জোরালো আন্দোলন করেন। ২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলার ঘটনায় ক্যাম্পাস দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে।
পরে প্রশাসনের কড়া অবস্থানের কারণে আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়। প্রায় দেড় মাস পর ক্যাম্পাস খুললে নিয়মিত কোর্স স্বাভাবিক রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সান্ধ্যকোর্স চালু রাখার সিদ্ধান্তে অটল থাকে প্রশাসন।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র কলা ভবনের ২৪৪ নম্বর কক্ষে তৃতীয় বর্ষের রুটিন মাফিক ক্লাস শুরু করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান। ক্লাস চলাকালে বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. আখতারুজ্জামান এসে ওই শিক্ষককে সান্ধ্যকোর্সের পরীক্ষার কথা জানিয়ে ক্লাস শেষ করার কথা বলেন।
তবে, শিক্ষার্থীরা এতে প্রতিবাদ করলে ওই কক্ষ বাদ দিয়ে ২৪৫ নম্বর কক্ষে সান্ধ্যকোর্সের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরু করা হয়। তবে, ওই সময়ে ২৪৫নং কক্ষে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্লাস থাকলেও তা নেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের ক্লাসের ব্যাঘাত ঘটিয়ে সন্ধ্যাকালীন পরীক্ষা গ্রহণ করা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ ব্যাপারে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ও সন্ধ্যাকোর্স বিরোর্ধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ফারুক ইমন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সান্ধ্যকোর্স বিরোধী আন্দোলনের সময় এমন আশঙ্কার কথাই বলেছিলাম। নিয়মিত কোর্সের ক্লাস বাদ দিয়ে সান্ধকোর্সের পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনা ন্যাক্কারজনক। এমন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের থেকে কখনই কাম্য নয়।
আইন বিভাগের সভাপতি আহসান হাবিব বাংলানিউজকে বলেন, সান্ধ্যকালীন কোর্স ছয় মাসের, সেই হিসাবে জুলাই মাসে শেষ করার কথা। তাই দ্রুত পরীক্ষা শেষ করার স্বার্থে ও রমজানের কারণে দিনের বেলায় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সান্ধ্যকোর্সের কারণে নিয়মিত কোর্সের ক্লাস-পরীক্ষায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে নি বলে দাবি করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, নিয়মতি ক্লাস বন্ধ করে বা সন্ধ্যার আগে কখনই সান্ধ্যকালীন কোর্সের ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। আইন বিভাগে যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৪