রাবি: ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার তদন্তে হত্যার মোটিভ খোঁজা হয়নি। হত্যায় জড়িতদের শুধু চিহ্নিত ও বিচার করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, অব্যাহত ষড়যন্ত্র; মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য নায়কদের চিহ্নিত করতে নতুন করে ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে হবে।
শাহরিয়ার কবির বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য নায়কদের চিহ্নিত করতে জাতীয় কমিশন গঠন করতে হবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও কমিশন গঠন করতে হবে। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে আইএসআই ও সিআইএর ভূমিকা জনসন্মুখে প্রকাশ করতে হবে। জাতিকে জানাতে হবে বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য নায়ক কারা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে, কারণ তাকে হত্যা না করলে ৭২ এর সংবিধান থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুছে ফেলা যেত না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করা যেত না। বুঝতে হবে কারা এসব কাজ করেছে। তারাই বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্য নায়ক।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার তিনটি কারণ উল্লেখ করে শাহরিয়ার কবির বলেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়া, বাহাত্তরের সংবিধান বিলুপ্ত করা এবং বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর অপচেষ্টা হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। যার পেছনে যুদ্ধাপরাধীদের নিরাপত্তা দেওয়া মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে।
শাহরিয়ার কবির আরো বলেন, প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জামায়াত ঢুকে পড়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মধ্যেও জামায়াত ঢুকে পড়েছে। তারা বিভিন্নভাবে বিচার বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। প্রশাসনে যেসব পাকিস্তানপন্থি জামাতিরা ঢুকে পড়েছে তাদের চিহ্নিত করে সারাদেশে স্থানীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়েও জামায়াত-শিবিরের দালাল ঢুকে পড়েছে। এ জন্যই এখন পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের মতো জঙ্গিদের অর্থ সহায়তা দানকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়নি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার আগে যেমন তার আশেপাশে পাকিস্তানপন্থিরা ঘিরে ছিল, তেমনি এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশেপাশে পাকিস্তানপন্থিরা ঘিরে রেখেছে। আরেকটি ১৫ আগস্ট দেখতে না চাইলে আমাদের সবাইকে সতর্ক হতে হবে।
রাবি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর শিবির ক্যাডারদের হামলার কথা উল্লেখ করে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সাতদিনের মধ্যে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, সাত দিনের মধ্যে এসব সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা না হলে এখানকার প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের জামায়াত-শিবিরের এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি রাবি শাখার আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাঈল হোসন সিরাজী ভবনের গ্যালারিতে এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাবেক রাবি উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল খালেক, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক চৌধরী সারওয়ার জাহান, সমাজসেবী শাহীন আকতার রেনী প্রমুখ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি রাবি শাখার আহ্বায়ক মতিউর রহমান মত্তুর্জা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৪